এডিবি’র বার্ষিক সভায় অর্থ উপদেষ্টা
সংকটপূর্ণ সময়ে আগের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উন্নততর ভূমিকা রাখার আহবান
৬ মে ২০২৫ ১৬:০১ | আপডেট: ৬ মে ২০২৫ ১৬:২৫
ঢাকা: বাংলাদেশের সংকটপূর্ণ সময়ে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উন্নততর ভূমিকা রাখার জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
মিলানে চলমান এডিবি’র ৫৮তম বার্ষিক সভায় প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (৬ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এডিবি’র সভায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের পথে এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ সংকটপূর্ণ সময়ে শুধু অর্থায়ন নয়, কাঠামোগত সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এডিবি’র ভূমিকা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
এডিবি’র বার্ষিক সভার “এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া, আগামীর প্রস্তুতি’ অত্যন্ত সময়োপযোগী ও অনুপ্রেরণাদায়ক”- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আজকের সংকটকে আগামীর সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে হলে আমাদের সাহসী চিন্তাধারা, গভীর অংশীদারিত্ব ও সম্মিলিত সংকল্পের প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, এডিবি’র এবারের বার্ষিক সভায় অর্থ উপদেষ্টা বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, এবারের এডিবি’র বার্ষিক সভায় আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানো, আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করা ও ছাড়যুক্ত তহবিল বাড়ানোসহ চারটি বিষয়ে উন্নততর সহযোগিতার জন্য সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ। এগুলো হচ্ছে- ১) ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি: অবকাঠামো, ই-গভর্ন্যান্স ও ডিজিটাল শিক্ষা সম্প্রসারণে সহায়তা বাড়ানো;
২) জলবায়ু কার্যক্রম: নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু-বান্ধব কৃষি এবং উপকূলীয় সুরক্ষার জন্য অধিক পরিমাণে ছাড়যুক্ত অর্থায়ন;
৩) আঞ্চলিক সংযোগ: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, শক্তি ও পরিষেবা ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করা এবং
৪) টেকসই অর্থায়ন: ঋণ টেকসইতা বজায় রেখে উন্নয়ন চাহিদা পূরণে ছাড়যুক্ত তহবিল ও উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানো।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, এডিবি’র সভায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল। অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবুজ বিনিয়োগ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, নদী পুনরুদ্ধার, বেসরকারি খাত, কারিগরি সহায়তা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা, সাইবার নিরাপত্তা ও যৌথ গবেষণায় সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, বাংলাদেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক আর্থিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের মূল উন্নয়ন অগ্রাধিকারের প্রতি যেমন- জলবায়ু সহনশীলতা, মানবিক সহায়তা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি- এসব ক্ষেত্রে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশল অনুযায়ী, এফসিডিও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বাণিজ্য, জলবায়ু অর্থায়ন, এসএমই উন্নয়ন, ডিজিটাল প্রশাসন এবং শিক্ষা খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, গত পাঁচ দশকে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে আনুমানিক ৩১৯ কোটি ডলার উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে, যা মূলত দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরএস
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এডিবি’র ৫৮তম বার্ষিক সভা