কবিগুরুর ১৬৪তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে কাছারি বাড়িতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি
৬ মে ২০২৫ ১৬:৪৮
নওগাঁ: আগামী ২৫ বৈশাখ (৮ মে) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসরে কবির কাছারি বাড়িতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো কাছারি বাড়িতে তিনদিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এরিমধ্যেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সভার মাধ্যমে আগত অতিথিদের নামও চূড়ান্ত করেছে জেলা প্রশাসন।
এর আগে, গত (৪ মে) রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। সভায় যথাযথ মর্যাদায় ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে দুই কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের কর্ম পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নেওয়া হয়। সভায় জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, জেলা পুলিশের কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের প্রধান, সদর, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অন্যান্য কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তি, সংস্কৃতিকর্মী, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
পতিসর রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘরের সহকারি কাস্টোডিয়ান ইশতিয়াক আহমেদ জানান, কবীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে পতিসরে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এরিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেবেন্দ্র মঞ্চ রঙ করা, প্যান্ডেল স্থাপন, তোরণসহ অন্যান্য কাজগুলো শেষের পথে। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানও অব্যাহত রাখা হয়েছে। আগামী ৭ মে’র মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, কাছারি বাড়ি পতিসরে এবার কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জাতীয়ভাবে তিনদিনের নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। এ ছাড়া দেবেন্দ্র মঞ্চে জেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজ সংস্কৃতি ও স্থানীয় রবীন্দ্র গবেষকদের অংশগ্রহণে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা শেষে জেলা, রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির নিয়মিত শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে রবীন্দ্র সংগীত। তিনদিনের অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মীরা যেন তাদের পেশাগত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন সেই জন্য সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন জেলার বিভিন্ন স্থানের ও স্থানীয় রবীন্দ্র গবেষক ও রবীন্দ্র ভক্তদের মধ্য থেকে কারা রবীন্দ্র আলোচক হিসেবে আলোচনা করবেন সেই নামের তালিকা তৈরি করবেন উপ-কমিটির সদস্যরা। প্রতি বছরই রবীন্দ্র জন্মদিনে পতিসরে বসে গ্রামীণ মেলা। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো স্থানীয় একটি কলেজ মাঠে ঐতিহ্য হিসেবে তিনদিন স্থানীয়দের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন রবীন্দ্র মেলার আয়োজন করবে। যেখানে মাছের মেলা, জামাই মেলাসহ অন্যান্য গ্রামীণ লোকজ সংস্কৃতির পসরা থাকবে। মেলায় শিশুদের জন্য থাকবে আকর্ষণীয় বিভিন্ন আয়োজন। থাকবে সাকার্স, ক’পের মধ্যে মোটরসাইকেল খেলা, নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আয়োজন।
এ ছাড়া স্থানীয়দের সহযোগিতায় রবীন্দ্র মেলা, রবীন্দ্র সংস্কৃতি চর্চা, রবীন্দ্র সংগীত, রবীন্দ্র কবিতা, রবীন্দ্র গবেষণা সবগুলো বিষয়কে নিয়ে একটি বার্তা এই অঞ্চলের মানুষদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। গৃহিত অনুষ্ঠানসূচি প্রচার করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলো সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে গঠিত উপ-কমিটিসহ প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
সারাবাংলা/এইচআই