সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে ইসির জবাবদিহি চায় এনসিপি
৬ মে ২০২৫ ১৮:০৪ | আপডেট: ৬ মে ২০২৫ ২১:৩১
ঢাকা: সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধ করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ইসির মেয়াদের মধ্যে ও মেয়াদের পরেও কোনো অভিযোগ উঠলে এ কাউন্সিলে দায়বদ্ধতা করার পক্ষে দলটি।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের বিরতিতে এসব কথা বলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ইসির বিরুদ্ধে মেয়াদ পরবর্তী সময়ে কোনো অভিযোগ উঠলে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির মাধ্যমে তদন্তের ক্ষমতা দেওয়ার সুপারিশ করেছিল। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আপত্তি জানিয়েছে। তাদের দাবি ইসি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন প্রস্তাব সামনে এনেছে এনসিপি।
সরোয়ার তুষার বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশন জবাবদির আওতায় আনতে হবে। যেহেতু সংসদীয় কমিটির ক্ষেত্রে আপত্তি উঠেছে আমরা এটাকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিশনের ব্যাপারে যে কোনো ধরনের অভিযোগের তদন করতে পারে।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের রাখার পক্ষে একমত এনসিপি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। নিম্নকক্ষ এবং উচ্চ কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের পরে, গণভোটে বিধান থাকতে হবে। এরমধ্য দিয়ে সংবিধান সংশোধন হবে। প্রশ্ন উঠেছে ছোটখাটো সংশোধন যদি হয়। সে ক্ষেত্রে গণভোটে যেতে হবে কিনা প্রশ্ন উঠেছে। আমরা স্পেসিফিক করে কয়েকটা ধারা বলে দিয়েছি যে, এই সমস্ত সংশোধনের জন্য অবশ্যই গনভোটে যেতে হবে। পাওয়ার স্ট্রাকচার বা প্রস্তাবনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বা মূলনীতি সংশোধনের জন্য গণভোটে যেতে হবে। রুটিন সংশোধনের জন্য দুই- তৃতীয়াংশই যথেষ্ট।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ। জ্যেষ্ঠ তিনজনের মধ্যে একজন বাঁছাইয়ের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বলেছে। যিনি জ্যেষ্ঠতম থাকবেন তিনি প্রধান বিচারপতি হবেন।’
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতির সেটাকে আমরা সমর্থন করেছি। সেখানে দুই পক্ষের সংসদ সদস্যদের বাইরে জেলা কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে নির্বাচন কাউন্সিল তারা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করবে। আরও স্থানীয় প্রতিনিধি যোগ করার জন্য আমরা বলেছি।
এমসিপি এই নেতা বলেন, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের তিন অর্থ বছরে একবার করে তাদের সম্পদের বিবরণ হিসাব দেওয়ার জন্য বলেছে কমিশন। আমরা বলেছি, প্রতি আয়কর বছরই এটা করা দরকার। প্রতি বছর সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাদের হিসাব দিতে বাধ্য থাকিবে।
নিম্নকক্ষে নারী আসন নিয়ে আগেও আলোচনা হয়েছিল আজকেও আলোচনা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১০০ আসনে সরাসরি নারীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ১০০ জন নারী পার্লামেন্টে যাবে। এটাকে আমরা সমর্থন করছি। উচ্চ আসনে ১০০ জনের ২৫শতংশ নারী রাখার জন্য আমরা প্রস্তাব করেছি।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে মামলা গ্রহণের ক্ষমতা করেছেন কমিশন। আমরা দ্বিমত করেছি। বিচারিক ক্ষমতা বিচার বিভাগে থাকার জন্য আমরা বলেছি।
জেলা পরিষদ বাতিলের প্রস্তাবের বিষয়ে দ্বিমত জানিয়ে সারোয়ার তুষার বলেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্তর কথা বলেছেন, আমরা বলেছি না। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মেম্বারদের ভোটে নির্বাচিত করার কথা বলেছেন। চেয়ারম্যান সরাসরি ভোটে জনগনের নির্বাচিত হবেন। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক যেন না থাকে। এটার কারণে আমাদের সমাজে সহিংসতা একেবারে গভীর পর্যন্ত পৌঁছেছে। আমাদের ভয়ংকর একটা সাংস্কৃতিক তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদি কাণ্ড থেকে মুক্ত করতে হবে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
সারাবাংলা/এনএল/ইআ