থানচিতে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ
৬ মে ২০২৫ ২০:২৮
জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদসহ একাধিক সংগঠন।
ঢাকা: বান্দরবানের থানচি উপজেলায় এক খেয়াং আদিবাসী নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদসহ একাধিক সংগঠন। এতে তারা খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন তারা।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশটিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।
সমাবেশ শেষে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। যেটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ঘুরে অপরাজেয় বাংলায় এসে শেষ হয়।
সোমবার (৫ মে) বান্দরবানের থানচিতে জঙ্গল থেকে এক খেয়াং নারীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। যার প্রতিবাদে তারা এ সমাবেশে আয়োজন করেছে।
সমাবেশে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘বাংলাদেশের সমতল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে দুই ধরণের শাসনব্যবস্থা চলমান। আপনারা সবাই জানেন অপারেশন উত্তরণের নামে এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা শাসন চলমান রয়েছে। কিন্তু তারপরও এত এত ধর্ষণ হয় তার কোনোটার সুষ্ঠু বিচার হয় না। দুঃখের বিষয় আমারদের কথা কেউ বলে না। আপনারা রোহিঙ্গা এবং রাখাইনের ইস্যুতে মানবিতার ফেরিওয়ালা হন কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের বেলায় সন্ত্রাসী, দেশদ্রোহী বানায়ে দেন।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, ‘বান্দরবানের পুলিশ ও জেলা প্রশাসক একটি সংবাদ সম্মেলন করেছে। জায়গাটি দুর্গম হওয়ার কারণে তারা নাকি ঠিক বুঝতে পারছে না কি হয়েছে। আপনারা জায়গাকে দুর্গম বলে আইনকে অন্যদিকে মোড় ঘুরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। ওখানে কি রকেট ছিলো যে ধর্ষকরা রকেটে করে পালিয়ে গেলো? তা না হলে ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও কেন তাদের গ্রেফতার করা হলো না।’
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈসানু মারমা বলেন, ‘‘আমাদের কষ্ট একটাই, গতকালের পাহাড়ী নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কখনো রাত জাগবে না। এই সারা বাংলাদেশ রাত জাগবে না। বরং তারা এই হত্যাকে জাস্টিফাই করেছে এই বলে যে তারা দেশদ্রোহী, সুতরাং তাদের ধর্ষণ ‘বৈধ’।’’
বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অংশৈসিং মারমা বলেন, ‘পাহাড়ের ধর্ষণের ঘটনাগুলোকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ধামাচাপা দেয় এই অজুহাতে যে সেখানে সাম্প্রদায়িক ঘটনা হতে পারে। আমরা জানি পাহাড়ের প্রত্যেক ধর্ষণ ঘটনায় এক অদৃশ্য শক্তি কাজ করে।’
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেত্রী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘আমাদের পাহাড়ের ধর্ষণের ঘটনাগুলো কখনোই মূল ধারার সংবাদ মাধ্যমে আসে না। এর কারণ বাঙালি জনগোষ্ঠীর মানসিকতা। আমরা চাই এসব মানসিকতার পরিবর্তন হোক।’
এ সমাবেশে আরও সংহতি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, ঢাকা মহানগর শাখা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টুস কাউন্সিল, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার ।
সারাবাংলা/কেকে/এমপি