Thursday 08 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ড. ইউনূসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে মাল্টিবিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ মে ২০২৫ ১৭:৩০ | আপডেট: ৮ মে ২০২৫ ১৮:৩৬

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বপ্ন ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশে প্রতিবছর মাল্টিবিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আসবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, তখন হয়তো আমরা (অন্তর্বর্তী সরকার) থাকব না, অন্য সরকার এসে ফসল তুলবে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রফেসর ড. ইউনূসের মতো প্রো-বিজনেস হেড অব গভর্নমেন্ট আর আসেনি। আমরা ডাভোসে গিয়েছি। উনি একদিনে ৩৬টা মিটিং করেছেন, সকাল থেকে রাত ৮টা-৯টা পর্যন্ত। পুরো ফোকাসটাই ছিল বাংলাদেশে কীভাবে বিজনেস আনা যায়। উনার মূল ফোকাস হচ্ছে, বাংলাদেশে বিজনেস আনতে হবে এবং বাংলাদেশে অসংখ্য জব তৈরি করতে হবে। খুব দ্রুত এই জবগুলো তৈরি করতে হবে। নিউইয়র্কে গিয়েছেন, সেখানে উনি চারদিনে ৫১টা মিটিং করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছেন উনি বড় বড় বিজনেসম্যানদের সঙ্গে কথা বলছেন, পটেনশিয়াল ইনভেস্টর যারা তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। বাংলাদেশের বিষয়ে যারা ওয়াকিবহাল আছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলছেন। উনার ফোকাসটা হচ্ছে কীভাবে বাংলাদেশে ডিরেক্ট ফরেন ইনভেস্টমেন্ট আনা যায়।’

‘বাংলাদেশে গত ২০, ২৫, ৩০ বছরে আমরা যে ইনভেস্টমেন্টটা চেয়েছি, সেটা আমরা আনতে পারিনি। ফলে আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী জব ক্রিয়েট হয়নি। আপনারা দেখেন, চট্টগ্রাম রিজিয়ন জুড়ে সবাই চলে যাচ্ছে মিডলইস্টে। যারা বিশাল একটা প্রোডাকটিভ ফোর্স হতে পারতো, তারা চলে যাচ্ছে মিডলইস্টে। আমরা চাই তারা বাংলাদেশে থাকুক। যে টাকাটা তারা বিদেশে ইনকাম করে, সেই টাকাটা বাংলাদেশে বসে ইনকাম করুক। প্রফেসর ইউনুস চান, বাংলাদেশকে উনি গ্লোবাল ফ্যাক্টরি বানাবেন। উনার কথা হচ্ছে, এটা করতেই হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা না বাড়লে বিনিয়োগ আসবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রফেসর ইউনূস যতগুলো মিটিং করেছেন, অন্তত দুই ডজন মিটিংয়ে উনাকে সবাই বলেছেন যে, আপনার চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে হবে, না হলে বড় ইনভেস্টমেন্ট আসবে না। সবাই বলেছেন, আপনার প্রোডাক্টের ডেলিভারি বা আপনি যখন একটা অর্ডার পাচ্ছেন, সেটার ডেলিভারি সাত-আট, ১০দিনের মধ্যে আনতে হবে, এখন যেটা আমাদের ৩০-৪০ দিন লেগে যায়। না হলে এখানে বড় বিনিয়োগ আসবে না।’

চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে প্রধান উপদেষ্টার অনেক বড় স্বপ্ন- এমন মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, ‘ওয়ার্ল্ডের লার্জেস্ট পোর্ট অপারেটরগুলো, তাদের সঙ্গে চুক্তি করে, চট্টগ্রাম বন্দরকে কীভাবে এফিশিয়েন্সির জায়গায় আরও উঁচু লেভেলে নিয়ে যাওয়া যায়, যাতে আমরা সবাই বেনিফিটেড হয়। তাদের এফিশিয়েন্সি দেখে যেন, বিশ্বের বড় বড় ইনভেস্টররা বাংলাদেশে আসেন। সেটার একটা মহাপ্ল্যান এ সরকারের তরফ থেকে আছে।’

মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যে প্ল্যানগুলো নিয়েছি, সেগুলো ইন্টেরিম গভর্নমেন্টের আমলেই বাস্তবায়ন হবে। আমাদের প্ল্যান হচ্ছে দ্রুত চুক্তিগুলো করা। তারপর আপনারা দেখবেন, প্রতিবছর বাংলাদেশে মাল্টিবিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট হবে। প্রতিবছর আমরা যে ছোটখাট ইনভেস্টমেন্ট পাই, তার চেয়ে অন্তত ১০-১৫ গুণ বেশি আসবে। আমরা হয়তো থাকব না, অন্য সরকার এসে তার ফসল তুলবেন। বাট এটলিস্ট আমরা বলতে পারব যে, দেশের জন্য এ কাজটা করেছি।’

সরকারের উদ্যোগ নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে মন্তব্য করে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা অনেক ধরনের মিস ইনফরমেশন দেখছি, ডিজইনফরমেশন দেখছি। অনেকে বলছেন জব চলে যাবে। জব যাবে না, বরং জব দশগুণ বাড়বে। অনেকে বলছেন দেশের স্বার্থহানি হয় এমন কাউকে আমরা দিয়ে দিচ্ছি। দেশের স্বার্থহানি হবে না। আমরা চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও বড় দেখতে চাই। পুরো রিজিওনের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্দর হিসেবে দেখতে চাই। শুধু বাংলাদেশ নয়, বাংলাদেশের আশপাশের সমস্ত দেশগুলোকে যাতে এটা সার্ভ করতে পারে। ৪০ কোটি লোককে যেন চট্টগ্রাম বন্দর সার্ভ করতে পারে।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

টপ নিউজ প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব বিনিয়োগ শফিকুল আলম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর