চলতি বছরে এলএনজি আমদানিতে নিট ঘাটতি ১১ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা
৮ মে ২০২৫ ২১:১৩ | আপডেট: ৮ মে ২০২৫ ২১:২৬
ঢাকা: অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় দেশে এলএনজি আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। গ্যাসের চাহিদা মেটাতে চলতি পঞ্জিকা বছরে ৯৮টি এলএনজি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৯০টি কার্গো আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এসব কার্গো আমদানিতে ব্যয় হবে ৪৫৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৬ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা (১ ডলার=১২৩ টাকা হিসাবে)। এ হিসাব বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র মতে, আমদানিকৃত গ্যাসের মোট বিক্রয় মূল্য হচ্ছে ৩৮ হাজার ৯৭০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা। এদিকে জ্বালানি খাতে মোট ভর্তুকির পরিমাণ হচ্ছে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ভর্তুকি বরাদ্দ বাদ দিলে এলএনজি আমদানিতে চলতি বছরে নিট ঘাটতি দাঁড়াবে প্রায় ১১ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। প্রতি ঘনমিটারে গ্যাসের প্রাইস গ্যাপ হচ্ছে ৭ টাকা ৮ পয়সা।
সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ এমএমসিএফডি। এর বিপরীতে দৈনিক গড় উৎপাদনের পরিমাণ ২ হাজার ৭০৭ এমএমসিএফডি। অর্থাৎ দৈনিক ঘাটতি প্রায় ১১শ’ এমএমসিএফডি। এলএনজি আমদানির মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণ করা হয়।
এদিকে ডলারের দাম বাড়ার কারণে এলএনজি কার্গো আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির গড় মূল্য প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ দশমিক ৫০ ডলার। আর স্পট মার্কেট থেকে কেনা হলে প্রতি এমএমবিটিইউ এর গড় মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১৪ ডলার। এমতাবস্থায় আমদানি ব্যয় কমাতে আগামী ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজি আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র মতে, প্রতি বছর দেশে অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন কমছে। চলতি বছরের মার্চে দৈনিক গ্যাসের গড় উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৮৬২ এমএমসএফডি। এর আগে ২০২৩ ও ২০২৪ সালের একই মাসে গ্যাসের গড় উৎপাদন ছিল যথাক্রমে ২ হাজার ১৭৬ এমএমসিএফডি এবং ২ হাজার ৪০ এমএমসিএফডি।
সূত্র জানায়, এ প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে চলতি বছরের মধ্যে ৫০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় গ্রিডে ৬৪৮ এমএমসিএফডি গ্যাস যুক্ত হবে। একইভাবে আগামী ২০২৮ সালের মধ্যে ১০০টি কূপ খনন ও ওয়ার্কওভারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় গ্রিডে ৯৮৫ এমএমসিএফডি গ্যাস যুক্ত হবে। এছাড়া চলতি বছরেরর মধ্যেই গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থায় বিদ্যমান সিস্টেম/কারিগরি লস ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ বাজারে গ্যাসের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রীম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরএস