Thursday 08 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ সংশোধনের দাবি টিআইবি’র

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৮ মে ২০২৫ ২০:০৮ | আপডেট: ৮ মে ২০২৫ ২২:৩৪

ঢাকা: সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ কে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও ‘দুর্নীতি সহায়ক আইন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সিএজির সাংবিধানিক মর্যাদা খর্বকারী, কর ফাঁকি ও দুর্নীতি-সহায়ক অধ্যাদেশ অনতিবিলম্বে সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সিএজির সাংবিধানিক মর্যাদাকে রীতিমতো খর্ব করা হয়েছে। পাস হওয়া অধ্যাদেশে আমরা এমন বেশ কিছু বিধান দেখছি, যা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সিএজিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। এ অধ্যাদেশ একটি কর ফাঁকি ও দুর্নীতি সহায়ক আইন, যা উদ্বেগজনক।

তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সুপারিশকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে অধ্যাদেশটি যেভাবে পাস করা হয়েছে তা অত্যন্ত হতাশাজনক ও নিন্দনীয়।’

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিধি প্রণয়ণ, চুক্তি সম্পাদন, সিএজি কার্যালয়ের সাংগঠনিক কাঠামো, পদ-বিন্যাস, দপ্তর একীভূতকরণ, পৃথককরণ বা বিলুপ্তকরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ সকল ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত করে সিএজিকে বাস্তবে সরকারের কর্তৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ সংবিধানের ১২৮(৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সিএজিকে অন্য কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের পরিচালনা বা নিয়ন্ত্রণের অধীন করা হবে না। তা ছাড়া, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অধ্যাদেশে সিএজির জন্য রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়কে নিরীক্ষার বাইরে রাখা হয়েছে। এতে সরকারি রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ের বিষয়টি জবাবদিহির বাইরে থেকে যাবে।

বিজ্ঞাপন

সিএজি সকল প্রকার সরকারি হিসাবের নিরীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান- এই প্রতিষ্ঠানকে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ ও প্রভাবমুক্ত রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তা ছাড়া, রাজস্ব নিরূপণ ও আদায়ে অনিয়ম এবং যোগসাজশমূলক জালিয়াতি যে বাংলাদেশে কর ফাঁকির অন্যতম মাধ্যম, তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপেক্ষা করার বিষয়টি কোনোভাবেই বোধগম্য নয়। আমাদের প্রত্যাশা ছিলো সরকারি হিসাব নিরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার আরও দায়িত্ব ও সংবেদনশীলতার পরিচয় দেবে। যে মূহুর্তে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের কাজ চলছে, তখন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা খর্ব করে অধ্যাদেশ জারি করা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং জুলাই আন্দোলনের চেতনা ও প্রত্যাশার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া নিয়ে সুপারিশমালা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করেছিলো টিআইবি। সব সুপারিশকে উপেক্ষা করে সুকৌশলে এই অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমরা জাতীয় রাজস্ব ও প্রাপ্তির নিরীক্ষার এখতিয়ার, নিরীক্ষাধীন সকল প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর দায় ও জবাবদিহি, নিজস্ব জনবল নিয়োগের এখতিয়ার এবং বিধি প্রণয়ন বিষয়ে সিএজির প্রাধাণ্য নিশ্চিত ও কার্যকরতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত সুপারিশ করেছিলাম। কিন্তু রাষ্ট্রের স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলোকে বেছে বেছে বাদ দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/এনএল/আরএস

টিআইবি সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫’

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর