যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে ভারত ও পাকিস্তান। এ নিয়ে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন।
শনিবার (১০ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি শহরে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।
এর পরই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে।’ তিনি ভারতের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন কঠোরভাবে মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান।
এর জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভারতই বরং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। পাকিস্তানি বাহিনী দায়িত্বশীল ও সংযমীভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।
রোববার (১১ মে) ভোরে এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের সঙ্গে সই করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে তারা ‘পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে অঙ্গীকারবদ্ধ’।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিরতির সফল বাস্তবায়নে যেকোনও জটিলতা সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। একইসঙ্গে সীমান্তে অবস্থানরত সৈন্যদেরও সংযম প্রদর্শন করা জরুরি।
এর আগে গতকাল বিকেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে সকল ধরণের গুলিবর্ষণ এবং সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করবে।’
প্রায় একই সময়ে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ‘পাকিস্তান ও ভারত তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।’ পাকিস্তান সর্বদা তার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে আপস না করে এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
দশকের পর দশক ধরে চলা ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় গত ২২ এপ্রিল। ওইদিন ভারত শাসিত কাশ্মীরে বন্দুক হামলায় ২৬ জনকে হত্যা করা হয়। নয়াদিল্লি এ জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান। ওই ঘটনার পর গত ৭ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এর পর থেকে হামলা-পাল্টা হামলা চলতে থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্র। অতঃপর শনিবার বিকেল ৫টা থেকে ভারত ও পাকিস্তান তাৎক্ষণিক ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়।