ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
রোববার (১১ মে) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন – মাসুদ রানা চৌকিদার (৩৮), শাকিল (২১), মামুন (৪০), মো. রাব্বি (২৬), মো. আসাদ মিয়া (৪৫), মো. পলাশ শেখ (৩৭) ও আনোয়ার হেসেন (৪৪)। শনিবার (১০ মে) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি, ৩৬টি ককটেল এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডিবি বেশ কিছুদিন যাবত আন্তঃজেলা ডাকাত দলকে ধরার জন্য অভিযান চালিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত ডিবি কর্তৃক ডাকাত চক্রের ৮৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ধরনের কার্যক্রম করতে গিয়ে সারা বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি বিশেষ ধরনের ডাকাত চক্রের সন্ধান পায় ডিবি, যাদের মূল লক্ষ্য স্বর্ণের দোকান ডাকাতি করা। এক্ষেত্রে ডাকাতি কার্যক্রম সংঘটনের পূর্বে তারা রেকি করে এবং ডাকাতি কাজে অস্ত্র গোলাবারুদ ব্যবহার করে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসে। ফলে এধরনের আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যদের গতিবিধির উপর ডিবির গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়।
তারা আরো জানান, তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা নজরদারি হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কিশোরগঞ্জ জেলার আনোয়ার হোসেন এবং বরিশাল জেলার পলাশের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দল কোনো একটি স্বর্ণের দোকান ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন দনিয়া কলেজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি ৭.৬২ এমএম বিদেশী পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলিসহ মাসুদ রানা চৌকিদারকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে ডাকাতি পরিকল্পনার বিষয়টি স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্যে তার বাসায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় ব্যবহারের জন্য ৩৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকগুলো ইতোমধ্যে বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট কর্তৃক নিষ্ক্রিয় করত আদালতে উপস্থাপনের জন্য ভিডিও ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডাকাতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্যান্য সহযোগীরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান হতে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজের সামনে একত্রিত হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন বৌলতলী বাজারের নিউ ডলি জুয়েলার্সে ডাকাতি সংঘটিত করবে বলে আমরা জানতে পারি। অন্যান্য ডাকাতদের গ্রেফতারের জন্য আভিযানিক দলটি ধৃত মাসুদ চৌকিদারসহ দনিয়া কলেজের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। এক পর্যায়ে সকাল রাত ১০টার দিকে একটি প্রাইভেট কার ও একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস যোগে ডাকাত দলের সদস্যরা উপস্থিত হয়। তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে শাকিল, মামুন, মো, রাব্বি, মো. আসাদ মিয়া নামের চারজনকে গ্রেফতার করে এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি গাড়ি জব্দ করে ।
পরবর্তীতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী মো. পলাশ শেখ এবং আনোয়ার হেসেনকে ধোলাইপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় সাত জন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।