ঢাবি: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন এবং নিয়মিত বিরতিতে রেইড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া।
বুধবার (১৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান আসিফ মাহমুদ।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামীকাল থেকে রেইড দেওয়া শুরু হবে। এখানে যেহেতু মাদকের বিষয় আছে, তাই ডিএমপির সঙ্গে নারকোটিক্সও যুক্ত থাকবে। এই রেডগুলো নিয়মিত হবে; যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।’
তিনি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে রমনা পার্কের মতো পরিচালনা করার বিষয়ে আলোচনা হবে। কীভাবে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। যেমন রাত ৮ বা সাড়ে ৮টার পর বন্ধ করে দেওয়া, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেট স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ-কালকের মধ্যে আপনারা এটি বন্ধ দেখতে পাবেন। গেট সংশ্লিষ্ট যে ভাসমান দোকানগুলো রয়েছে, সেগুলো স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ হবে। এটি দেখাশোনার জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা মনিটরিং টিম গঠন করা হবে।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোর ব্যবস্থার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ লাইট স্থাপন করা হবে। কোনো ব্লাংক স্পেস থাকবে না। এ ছাড়া উদ্যানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এগুলো ডিএমপি মনিটর করবে। এ ছাড়া উদ্যানে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বড় ঘটনা ঘটলে আমরা দেখি। এর বাইরে প্রতিদিন কোনো না কোনো ঘটনা ঘটে, ছিনতাই হয়। এগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের থেকে বেশি সহযোগিতা থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে চলা অব্যবস্থাপনা, মাদক ব্যবসা এবং অপরাধ চক্র এড্রেস করা আরও আগেই জরুরি ছিল। সাম্য আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে, আমাদের করণীয় কী।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয় যৌথভাবে দেখভাল করে। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার হয়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক যত অপরাধ সংগঠিত হয়, তার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশের সংযোগ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সঙ্গে রয়েছে। প্রলয় গ্যাং থেকে শুরু করে নানা ইস্যুতে দেখেছি।
উদ্যানে মাদকদ্রব্যের অবাধ বিচরণ বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে যদি একটি সামষ্টিক উদ্যোগে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে ছোটখাটো ঘটনা (প্রতিরোধ) নিশ্চিতের চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগে যতবার রেইড হয়েছে, কেবল বহিরাগত পাওয়া গেছে, ব্যাপারটি এমন নয়। বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও পাওয়া গেছে। এগুলো বন্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে এখানে দায়িত্বশীল ও সচেতনতামূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।’
সাম্যের হত্যার ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের পর কে অভিযুক্ত আসামি তা জানা যাবে। এই মামলাটি বিশেষ কোনো বডির কাছে হস্তান্তর করা হবে।’