ঢাকা: ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে ৫১টি প্রগতিশীল নারী, শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক, শ্রমিক ও পেশাজীবী সংগঠন। শুক্রবার (১৫ মে) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজকরা জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এই সমাবেশ নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং নারীর অধিকার রক্ষার আন্দোলনে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত।
সীমা দত্ত বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল ৩টায় ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’ নামে একটি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই কর্মসূচির সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য দিক হচ্ছে এক বিশাল সংখ্যক শ্রেণি-পেশা-চিন্তা ও রাজনৈতিক বোঝাপড়ার নারীদের আয়োজনে, নারীদের ডাকে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের জুলাই পরবর্তী নারী আন্দোলনের একটি মাইলফলক ঘটনা, যখন কিনা গণঅভ্যুত্থানের অংশীদারিত্ব থেকে নারীকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৬১টি নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৪৫ জন, দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৪২ জন, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ২৩ জনকে এবং ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৬ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ৮৫টি ধর্ষণের ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে। এর মধ্যে ৫১ জন নারী ধর্ষণ এবং ৩৪ জন নারী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আইন সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ৮ মাসে ৩৫৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা ঘটেছে ২৭টি।’
সীমা দত্ত বলেন, ‘ধর্ম ও নারী প্রশ্নকে এ দেশে মুখোমুখি দাঁড় করানো এই দেশের শাসক শ্রেণির এক চিরায়ত ষড়যন্ত্র। হাজার হাজার নারীর প্রকাশ্য পদচারণায় যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, সেই গণঅভ্যুত্থানের পরে নারীদেরকে রাষ্ট্রীয় অংশীদারিত্ব থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছে এই গোষ্ঠী। আগামীকাল ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার’ মূল স্লোগান ‘আমরা মিলিত হবো সম্মিলিত মুক্তির দাবিতে’।
মৈত্রী যাত্রায় সংহতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান, কবি ইউসুফ রেজা, কবি রোকন জহুর, কবি তাসকিনা ইয়াসমিন ও কবি নাহিদ হাসান।