গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় প্রস্তাবিত মানবিক সহায়তা পরিকল্পনায় নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও পক্ষপাতহীনতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে এতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতিসংঘ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘এই বিতরণ পরিকল্পনা আমাদের মৌলিক নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা ও পক্ষপাতহীনতা এই মূলনীতি লঙ্ঘিত হওয়ায় জাতিসংঘ এতে অংশ নেবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ চলতি মে মাসের শেষ দিকে গাজায় কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। তবে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার এই পরিকল্পনাকে আরও সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতির জন্য একটি মুখোশ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তুরস্কের আন্তালিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘এই পরিকল্পনার কিছু সমালোচনা রয়েছে, তবে আমরা গাজার মানুষের দুর্ভোগের ব্যাপারে সচেতন এবং বিকল্প কোনো কার্যকর পরিকল্পনা থাকলে সেটিও বিবেচনায় নিতে প্রস্তুত।’
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজায় জরুরি সহায়তা সরবরাহের জন্য জাতিসংঘের একটি সুসংগঠিত ও নীতিনিষ্ঠ পরিকল্পনা প্রস্তুত রয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর করা সম্ভব।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস মানবিক সহায়তা চুরি করছে, যদিও হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে রেখেছে এবং হামাসের হাতে থাকা সব বন্দী মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
এদিকে ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) উদ্যোগের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময়ের যুদ্ধের ফলে গাজা এখনও ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। অঞ্চলটির প্রায় ২ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষের বেশিরভাগই মারাত্মক খাদ্যসংকটে ভুগছেন।
সহায়তা বিতরণের জন্য প্রস্তাবিত ফাউন্ডেশনটি ইসরায়েলের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে থাকা নিরাপদ সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রগুলো আগামী ৩০ দিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলেও সম্প্রসারণ করতে এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাকে অবিলম্বে সহায়তা কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি দিতে।
তবে ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি ড্যানন বলেছেন, ‘আমরা এই প্রচেষ্টার অর্থায়ন করব না, তবে এটি সহজতর করতে সহায়তা করব। সহায়তা সরবরাহ পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন তহবিল।’
এদিকে এই ফাউন্ডেশন কীভাবে অর্থায়ন পাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই তহবিলে কোনো অর্থ দেবে না।