যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানিদের বুদ্ধিমান মানুষ হিসেবে প্রশংসা করেছেন এবং দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, তার কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য এক পারমাণবিক যুদ্ধ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘দুই দেশের সংঘাতটি একেবারে পারমাণবিক যুদ্ধ হতে যাচ্ছিল, আমার মনে হয়, বা খুব কাছাকাছি ছিল। এখন সবাই খুশি।’
তিনি জানান, তার প্রশাসনের পর্দার আড়ালের কূটনীতিই দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে সহায়ক হয়েছে। তিনি উভয় পক্ষকে বাণিজ্যের মাধ্যমে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, পাকিস্তানের নেতৃত্বের সঙ্গে তার চমৎকার আলোচনা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ভারতের অর্থনৈতিক নীতির সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশ।’ তবে তিনি স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারত শুল্ক কমাতে প্রস্তুত বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে।
ট্রাম্প দাবি করেন, পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন এই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ রোধ করা তার প্রেসিডেন্সির অন্যতম বড় সাফল্য।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এপ্রিল ২২-এ শুরু হয়, কাশ্মীরের পাহালগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর।
এরপর ভারত একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে- ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু পানি চুক্তি বাতিল, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত বন্ধ, নয়াদিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশন বন্ধ এবং কূটনৈতিক কর্মী হ্রাস।
পাকিস্তান এই অভিযোগ অভিনয়নির্ভর ও ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করে এবং জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির মাধ্যমে পালটা ব্যবস্থা গ্রহণ করে, যার মধ্যে ছিল—ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ, পাকিস্তানি আকাশসীমা বন্ধ এবং অন্যান্য সামরিক প্রতিক্রিয়া।
৭ মে সকালে পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত, যেখানে একটি মসজিদ ধ্বংস হয় এবং নারী, শিশু ও বয়স্কসহ বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
জবাবে পাকিস্তান তিনটি রাফালে যুদ্ধবিমান গুলি করে নামায় এবং পরের দুই দিনে ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে। ১০ মে ভারত পাকিস্তানের বিভিন্ন বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনিয়ান মারসুস’ চালিয়ে ভারতের সামরিক স্থাপনায় বড় ক্ষতি করে।
সেই রাতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন, যা পরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক ডার এবং ভারতের পররাষ্ট্রসচিব আলাদাভাবে নিশ্চিত করেন।