ঢাকা: পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেট হবে- অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার বাজেট, শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের বাজেট। বাজেট ব্যবস্থাপনায় যাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতি কমানোর কৌশল থাকবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন বাজেট হবে না। এখানে এমন ব্যয় থাকবে না যে, সাময়িকভাবে মনে হবে জনতুষ্টির, যার দায় গিয়ে পড়বে পববর্তী বাজেটগুলোর ওপর। বাজেট বাস্তবসম্মত করছি, ছোট নয়। গতবারের থেকে আগামী বাজেট ছোট হলেও তা কার্যকরী হবে।
রোববার (১৮ মে) রাজধানীর শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা (এনইসি) শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। সভায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার ব্যয় সংবলিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, অনেক অনেক ব্যয় আছে, যেমন টাকা ছাপিয়ে যে ব্যয় হয়, তার জন্য মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব সঙ্গে সঙ্গে পড়ে না। এর প্রভাব পড়ে পরবর্তী বছরগুলোতে। এখন যদি বেতন অনেক বাড়ানো হয়, এর প্রভাবও এখনই পড়বে না। কয়েক মাস পড়ে গিয়ে পড়বে। এ কারণে বর্তমান সরকার দায়িত্বজ্ঞানহীন কিছু করবে না, যার দায় পড়বে পরবর্তী বাজেটে।
তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়নে সরকার এত বেশি বৈদেশিক ঋণ নেবে না, যার জন্য পরিশোধের চাপ বাড়বে। ঋণের দুষ্টচত্রে যাতে না পড়ে, সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। রাজস্ব সংগ্রহ বাজারে প্রচেষ্টা করা হবে। সরকারি ব্যয় সীমিত করা হবে এবং ঘাটতি কমিয়ে আনা হবে এবং তা জিডিপি ৪ শতাংশের নিচে রাখার চেষ্টাও আমরা করছি।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ে এমন প্রকল্প নেওয়া হবে না। দীর্ঘমেয়াদি ঋণে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎপ্রকল্প হচ্ছে। তবে এই প্রকল্পে জাপান স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে।
কিছু প্রকল্পের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এডিপিতে যত প্রকল্প আছে সবই চলমান প্রকল্প। কিছু আছে যা ধুঁকে ধুঁকে খোঁড়াচ্ছে। অত্যধিক প্রকল্পের বিড়ম্বনা দেখা দিচ্ছে। কিছু প্রকল্প আছে- তা গিলতেও পারি না, ফেলতেও পারি না। সুপরিকল্পিত প্রকল্প নয় এগুলো।
তিনি আরও বলেন, কর্ণফুলী টানেল দিয়ে কোথায় যাবো জানি না। টানেল পার হয়েই ধু ধু মরুভূমি। এটা প্রকল্প না, শুধু রিসোর্টে যাওয়ার জন্যই এই প্রকল্প। ঢাকা-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্প ৩ হাজার কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হলো। অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। প্রকল্পের কাজ ৫৮ শতাংশ কাজ শেষ। তবে এই প্রকল্পের বাসগুলো কেনা হয়নি। কোরিয়া থেকে আনা হবে। বাসগুলো স্পেশাল অর্ডার দিয়ে আনতে আরও ৩ হাজার কোটি টাকা লাগবে। সামনে ঈদ আছে, র্যাপিড বাস ট্রানজিট ভুলে যান, সবকিছু খুলে দেন, যেন এই রুটে ঈদে জটলা তৈরি না হয়।
উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি, তবে অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। কিন্তু কোথাও ডাক্তার নেই। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে পরিচালন ব্যয় মেটানো হবে। উন্নয়ন বাজেটে এই খাতে নজর দেওয়া হবে। স্কুলের সমস্যা, বাচ্চাদের স্কুলে অনেক সমস্যা হচ্ছে।