ঢাকা: স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমানো অভ্যুত্থানের চেতনা বিরুদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
রোববার (১৮ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারসহ অতীতের সরকারগুলো শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের মতো মানবসম্পদ উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত খাতগুলোকে অবহেলা করেছে এবং পরিবহন ও যোগাযোগের মতো বাহ্যিক ও স্থুল উন্নয়নে উন্নয়ন বাজেটের বড় অংশ ব্যয় করেছে। ফলে, দেশে চকচক রাস্তা ও সেতু দেখা গেলেও ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের স্বর্ণ সময়ে বাংলাদেশের তারুণ্য সম্পদের বদলে বোঝায় পরিণত হয়েছে এবং স্বাস্থ্য সেবায় মানুষকে নাকাল হতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তারুণ্য নির্ভর অভ্যুত্থানের পরে জাতি আশা করেছিল এই সরকার অতীতের সরকারগুলোর পাপ মোচন করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে প্রধান করে বাজেট প্রস্তাব করবে। কিন্তু, বেদনার সাথে দেখছি এই সরকারও অতীত পাপ প্রবাহকে জারি রাখছে। সরকারের প্রতি আহবান করব, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতকে প্রাধান্য দিয়ে উন্নয়ন বাজেট পুনঃপ্রস্তাব করুন।’
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, পৃথিবীর যে ১০টি দেশ অর্থনীতির আকারের তুলনায় শিক্ষা খাতে সবচেয়ে কম বরাদ্দ দেয়, বাংলাদেশ তার একটি। শিক্ষা খাতে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৬ শতাংশ খরচ করার প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশে উন্নয়ন ও পরিচালনা মিলিয়ে মাত্র ২ শতাংশ খরচ হয়। এবার আমরা এই ধারার পরিবর্তন চেয়েছিলাম। কিন্তু এডিপি নিয়ে সরকারের চিন্তা আমাদেরকে হতাশ করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জোড় দাবি জানাচ্ছে যে, এবারের বাজেটে শিক্ষাখাতে জিডিপির ৬ শতাংশ বরাদ্দ করতে হবে যাতে করে শিক্ষার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানগত উন্নয়ন ও গবেষণা খাতে প্রবৃদ্ধি হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ আকর্ষণ, শিল্পায়ন এবং অর্থনীতিকে গতিশীল করার জন্য পরিবহন, যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুতখাতের গুরুত্ব আমরা অনুধাবন করি। কিন্তু, মানব সম্পদ উন্নয়ন না হলে এবং নাগরিকরা সুস্থ্য ও সবল না হলে বিনিয়োগ, শিল্পায়ন ও অর্থনীতির মূল লক্ষ্যই ব্যর্থ হবে। একই সাথে বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা বলে যে, যোগাযোগ ও জ্বালানি খাতই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্থ। এবারের বাজেটেও সেই খাতগুলোকেই প্রধান্য দেওয়া হয়েছে যা জনতার প্রত্যাশাকে আহত করেছে।’
‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আশা করে যে, গণশিক্ষা, গণস্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে প্রধান বিবেচ্য করে বাজেট প্রস্তাব করা হবে এবং প্রস্তাবিত বাজেট রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে পাশ করা হবে’, বলেন রেজাউল করীম।