ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ঘেরা সরকারি তিতুমীর কলেজে বিভিন্ন সংগঠন ও ক্লাবের যাত্রা বহু আগেই শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য, হতাশা এবং আবেগ প্রকাশের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সংগঠন ছিল না। এই অভাব পূরণের উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের ১৭ মার্চ, তিতুমীর কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের উদ্যমী কিছু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ সাইকোলজি সোসাইটি’। তিন বছরের পদযাত্রায় সোসাইটিটি বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেছে, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এর ধারাবাহিকতায় মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা মাস উপলক্ষে ‘মাইন্ড ম্যাটার্স: জিটিসি মেন্টাল হেলথ অ্যাওয়ারনেস উইক’ শিরোনামে সপ্তাহব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনা কর্মসূচির আয়োজন করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজ সাইকোলজি সোসাইটি।
রোববার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় কলেজের শহীদ বরকত মিলনায়তনের সামনে ফিতা কেটে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচির শুভ সূচনা করেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমদ। এসময় সাইকোলজি সোসাইটির মডারেটর, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাইকোলজি সোসাইটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচির আওতায় শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য চেকআপ, সচেতনতা সেমিনার, কাউন্সিলিং সেশন, শ্রেণীভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন থাকবে।
এই বিষয়ে সাইকোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. আদিত আহমেদ বলেন, আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এখনও ব্যাপক উদাসীনতা রয়েছে, যা বড় চ্যালেঞ্জ। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সেই চর্চাকে বদলাতে চাই। তিনি জানান, ১৯ মে কলেজের সাইকোলজি বিভাগের সেমিনার কক্ষে কাউন্সেলিং সেশন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একান্ত পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ পাবেন, যা তাদের মানসিক চাপ মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সাইকোলজি সোসাইটি মডারেটর সাজিয়া আফরিন খান বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা মাস উপলক্ষে সাইকোলজি সোসাইটির উদ্যোগে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বর্তমানে আমরা শারীরিক স্বাস্থ্য বিষয়ে যতটা সচেতন, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে ততটা নই। এর ফলেই অনেক শিক্ষার্থী হতাশা ও মানসিক চাপে ভোগে। তাদের মানসিক সুস্থতা ও সচেতনতা বাড়াতে আমাদের এই আয়োজন।
এমন উদ্যোগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সাধারণত মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খুব একটা আলোচনা করি না বেশিরভাগ সময় শারীরিক স্বাস্থ্যের দিকেই আমাদের মনোযোগ থাকে। তবে কলেজে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক কর্মসূচি দেখে ভালো লেগেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। আশা করি, সাইকোলজি সোসাইটি ভবিষ্যতেও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এমন কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাবে।