পাবনা: পাবনার আমিনপুর কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে দুইদিনে ৪১ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে ।
সোমবার (১৯ মে) সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের দোতলার যষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি কক্ষে ৩৫ জন ছাত্র ছাত্রী অচেতন হয়ে পরে। এর আগে রোববার (১৮ মে) ৬ জন শিক্ষার্থী অচেতন হওয়ার ঘটনা ঘটে।
অচেতন শিক্ষার্থীরা হলো— মাইমুনা খাতুন, সুমী, সুমাইয়া, জেরিন ইসলাম, জান্নাতুল, জাকিয়া আক্তার, মরিয়ম খাতুন, লিমা আক্তার, সাদ্দাম হোসেন, আসিফ, ফাতেমা খাতুন, দুলা আক্তার, মারিয়া, আসিফ মাহমুদ, জিয়াসমিন, মারিয়া, মুহাম্মদ আলী, রিফাত হোসেন, শাকিলা, সানজিদা, ফাতেমা খাতুন ও আফসানা খাতুন। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, রোববার শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে ক্লাস করতে থাকে। বিকেল তিনটার দিকে হঠাৎ সপ্তম শ্রেণির ৬ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ে। এদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এরপর সোমবার সকাল ১০ টার দিকে ক্লাস চলার সময় যষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৩৫ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরিবারের কাছে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দুটি শ্রেণিকক্ষ থেকেই এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, সকালে ভালো মানুষ স্কুলে আসল। একটু পরেই শুনলাম অসুস্থ। তাও একজন দুজন না। অনেক ছেলেমেয়ে অসুস্থ হয়েছে। আমরা স্কুলে গিয়ে নিয়ে এসে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা করে বাড়িতে নিয়ে আসছি।
তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল ৬ জন যখন অচেতন হয়েছে তখনই যদি শিক্ষকরা ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিতেন তাহলে এতোবড় ঘটনা ঘটত না। এরপর স্কুলের ক্লাসরুম গুলো খুবই নোংরা। স্কুলে কোনো নিরাপত্তা নাই। নিশ্চয় কোনো বখাটে অথবা দুষ্কৃতকারী রুমে ডুকে চেতনানাশক স্প্রে করেছে।’
কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফরহাদ হোসেনের বলেন, ‘গত দুইদিনে ৪১ জন শিক্ষার্থী অচেতন হয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি শ্রেণি কক্ষে এক ধরনের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ধারণা করেন শ্রেণি কক্ষে কেউ চেতনানাশক স্প্রে করে থাকতে পারে। আমরা এ বিষয়ে সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ করছি। এলাকার কোনো লোক এ কাজ করতে পারে কিনা খতিয়ে দেখছি। শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাহমিনা সুলতানা নিলা বলেন, ‘ভ্যাপসা গরম অথবা ফুড পয়োজনের কারণে অচেতন হয়ে থাকতে পারে। তবে পরিক্ষা না করে সঠিকভাবে কিছু বলা সম্ভব না। তবে সেখানে আমাদের মেডিকেল টিম গিয়েছে। স্বাস্থ্য পরিক্ষা করলেই আসল রহস্য বের হয়ে আসছে।’
বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের অচেতন হয়ে পড়ার বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। প্রধান শিক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ গিয়েছে। স্কুলের আঙিনা ও রুম অপরিচ্ছন্ন কিনা বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’