ঢাকা: চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি জনমনে সন্দেহ, ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা এবং রাজনীতিবিদদের ভেতরে অস্থিরতা তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনে মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ই্উনুস আহমেদ।
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘এই সরকারের প্রধান কাজ সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন করা। সংস্কারের ক্ষেত্রে দেশকে ভবিষ্যৎ স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত রাখতে মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কারই মূখ্য। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, সরকার তার মূল কাজের বাইরে এমন সব কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে, যা রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করছে, জনতা ও দলগুলোর মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ তৈরি করছে।’
‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অযথা বিতর্ক তৈরি করে দেশে মতাদর্শিক বিভাজনকে প্রকট করে তুলেছে। চট্রগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের ব্যবস্থাপনা ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টিও জনমনে সন্দেহ, ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা এবং রাজনীতিবিদদের ভেতরে অস্থিরতা তৈরি করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এই ধরনের কার্যক্রম থেকে সরে আসতে হবে’- বলেন ইউনুস আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল প্রত্যাশিত মাত্রার চেয়ে সব বিবেচনাতেই ভালো করেছে। তারপরেও কোন বিবেচনায় এবং কোন লক্ষ্যে এর পরিচালনার দায়িত্ব ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দিতে হবে, সেই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার কোনো আলোচনা নাই। মনে রাখতে হবে, চট্রগ্রাম বন্দর কেবলই একটা সামদ্রিক বন্দর না বরং এর ভূকৌশলগত অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই বন্দর নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জনগণের মতামত ছাড়া করা যাবে না। দেশে নির্বাচিত সরকার থাকলে বিষয়টা নিয়ে সংসদে আলোচনা হওয়া উচিৎ ছিল। এখন যেহেতু সংসদ নাই তাই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ বলেন, ‘ডিপি ওয়ার্ল্ড একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু, চট্রগ্রাম বন্দরের ভূরাজনৈতিক গুরুত্বের কারণে ডিপি ওয়ার্ল্ড এর হয়ে কোনো দেশের কারা এই বন্দর পরিচালনা করবে, তা গুরুত্বপূর্ণ। বিনিয়োগ ও পরিচালনার নাম করে উদ্দেশ্যমূলক অনুপ্রবেশের নজীর আধুনিক রাজনীতিতে বিরল নয়। তাই এই বিষয়ে কোনো ধরনের ব্যতিব্যস্ততা না করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিতর্ক এড়িয়ে জুলাই অভ্যুত্থানকে সার্থক করতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততার সঙ্গে বিচারের আওতায় আনা, মৌলিক সংস্কারের কাজকে গতিশীল করা এবং অর্থনীতিকে সবল করার কাজে মনোযোগ দিন। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক কাজে ব্যর্থ হলে জুলাইয়ের রক্ত আমাদেরকে ক্ষমা করবে না।’