ঢাকা: আজ ২১ মে বিশ্ব সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য দিবস। যার মূল উদ্দেশ্য হলো—বিশ্বজুড়ে থাকা নানা সংস্কৃতি, ভাষা, বিশ্বাস এবং জীবনের পদ্ধতির বৈচিত্র্যকে উদযাপন করা এবং সংলাপের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা।
এই দিবসটি ২০০১ সালে ইউনেস্কোর ‘Universal Declaration on Cultural Diversity’ গ্রহণের মাধ্যমে গুরুত্ব পায় এবং ২০০২ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২০০২ সালে একে ‘সংলাপ ও উন্নয়নের জন্য সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের আন্তর্জাতিক দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বিশ্বে সাত হাজারের বেশি ভাষা রয়েছে। হাজারো জাতিগোষ্ঠী ও সংস্কৃতি বিদ্যমান। এই বৈচিত্র্য কেবল ঐতিহ্যের দিক থেকে নয় বরং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও একটি বড় শক্তি। বৈচিত্র্য মানেই নতুন ভাবনা, নতুন ধারণা এবং সহযোগিতার নতুন সুযোগ।
তবে এই বৈচিত্র্য অনেক সময় বিভাজনের কারণও হতে পারে। যদি পারস্পরিক সম্মান, সহানুভূতি ও সংলাপের অভাব থাকে। আর তাই এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় বৈচিত্র্য বিভাজন নয়, বরং সংহতির উৎস হতে পারে।
এই দিবসের মূল বার্তা সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে সংলাপ গড়ে তোলা: বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মানুষদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে সংলাপের গুরুত্ব অপরিসীম।
সহনশীলতা ও সম্প্রীতির প্রসার: বৈচিত্র্য মেনে নেওয়া মানে সহনশীলতা ও একে অপরকে সম্মান করা।
সৃজনশীল অর্থনীতি ও উন্নয়ন: সাংস্কৃতিক শিল্প, হস্তশিল্প, সংগীত, সিনেমা ইত্যাদি বৈচিত্র্যময় উপাদানগুলোর মাধ্যমেও অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই দিবস বাংলাদেশ নিজেই একটি বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির দেশ। এখানে আছে বাংলা ভাষাভাষীদের পাশাপাশি নানা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী—যেমন চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো প্রভৃতি। তাদের নিজস্ব ভাষা, পোশাক, উৎসব, সংগীত—সবই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পদ।
২১ মে দিনটিতে আমাদের উচিত এদের ঐতিহ্যকে সম্মান জানানো এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বন্ধন তৈরি করা।
আমরা কী করতে পারি?
-ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে সংলাপে জড়ানো বহুজাতিক বা বহুভাষিক অনুষ্ঠান আয়োজন
-সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতা ছড়ানো
-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৈচিত্র্য নিয়ে আলোচনা
-বিশ্ব সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, একতা মানে একরকম হওয়া নয়। বরং একতা হলো—ভিন্নতাকে সম্মান জানিয়ে একসঙ্গে এগিয়ে চলা। আজকের দিনে আসুন আমরা বৈচিত্র্যকে ভয় নয়, ভালোবাসি।