ঢাকা: বিভিন্ন অভিযোগ এনে ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন প্রাক্তন ১৯ কর্মচারী।
বুধবার (২১ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন আবেদনকারীদের পক্ষের আইনজীবী মো. মাহবুবুর রহমান। এর আগে, মঙ্গলবার এ আবেদন করা হয়।
শ্রমিকদের সঙ্গে চলমান মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ম্যারিকোর ভারতীয় মূল প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৮২২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা যেন পাঠাতে না পারে, সেজন্য অর্থ অবরুদ্ধ করতে রুল চেয়ে আবেদন করেন ভুক্তভোগীরা।
আবেদনকারীরা জানান, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বঞ্চিত রেখে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে স্থানান্তরের চেষ্টা করছে ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড। অথচ বহু শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন শ্রমিকরা। নিজেদের টাকা আদায়ের ব্যাপারে হাইকোর্ট থেকে ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশাবাদী।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে ম্যারিকো। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির পণ্যের মধ্যে প্যারাসুট নারিকেল তেল, প্যারাসুট বেলি ফুল, প্যারাসুট এক্সট্রা কেয়ার, প্যারাসুট ন্যাচারাল শ্যাম্পু, সাফোলা এডিবল অয়েল, প্যারাসুট জাস্ট ফর বেবি ও অন্যান্য পণ্য রয়েছে। শুরুতে এসব পণ্যের পরিবেশনার দায়িত্বে ছিল কল্লোল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান কল্লোল ট্রেডার্স লিমিটেড।
ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ৯০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ও গত ১৬ বছরে প্রায় ৩২০০ কোটি টাকা মুনাফা রেমিট করেছে ভারতের মূল প্রতিষ্ঠান ম্যারিকো লিমিটেড। এর মধ্যে ৪১৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা রেমিট যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শুধুমাত্র ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই রেমিট যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে ১০৭৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা ১৬ বছরের মোট রেমিট টাকার প্রায় ৩৪ শতাংশ। এমতাবস্থায় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া এবং প্রাক্তন শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত আর কোনো অর্থ বিদেশে রেমিট না করতে হাইকোর্টে আবেদন করেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য, ২০০৬-০৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তহবিল গঠন করা থেকে বিরত থাকে ম্যারিকো। ফলে ২০১৪ সালে শ্রম আদালতে মামলা করেন শ্রমিকরা। পরে মামলাটি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে রিট করে ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড। এর মধ্যেই ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে শ্রমিক অংশগ্রহণ ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন শুরু করে। তবে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলার বাদী ১৯ শ্রমিক।