ঢাকা: সরকার কর্তৃক প্রণীত ও গেজেট আকারে প্রকাশিত বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২ এর বিধিমালাকে স্বাগত জানিয়েছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সদস্যদের নিয়ে গঠিত ‘বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ’।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ’ এর ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন বিধিমালাকে স্বাগত জানান পরিষদ নেতারা।
‘গেজেট আকারে প্রকাশিত এ বিধিমালায় ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে’ এমন দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘ ৩১ বৎসর পর ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুসারে একটি যুগোপযোগী বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে। যা আগামী প্রজন্মের কাছে মাইলফলক হয়ে থাকবে। এফবিসিসিআই’র আগামী নির্বাচন নতুন বিধির আলোকেই হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ‘বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ’ এর আহ্বায়ক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, এই বিধি আগামী দিনগুলোতে এফবিসিসিআইসহ দেশের সকল বাণিজ্য সংগঠন দখলদার মুক্ত হয়ে স্বকীয়তা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সাড়ে ৩ কোটি ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনবান্ধব করার উদ্যোগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৈষম্য ‘বিরোধী সংস্কার পরিষদ’ এবং সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবীর প্রেক্ষিতে বাণিজ্য সংগঠন বিধি ও এফবিসিসিআই এর সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সারাদেশে বিভিন্ন চেম্বার ও এসোসিয়েশনের সদস্যদের সাথে মত বিনিময় করে তাদের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে এ সকল প্রস্তাব এফবিসিসিআই’র প্রশাসক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন।
তিনি বলেন, আগে বড় পরিচালনা বোর্ড ছিলো- যা কোনো কাজে আসতো না। যা আমলে নিয়ে সংশোধন করা হয়েছে। আগে একেকজন নেতা ১০ বার নির্বাচিত হতেন এক টানা। আমরা সেখানে দুই বছর পর গ্যাপ দিয়ে আবার নির্বাচন করার সুপারিশ করেছি। সরকার সে সুপারিশ বিধিমালায় যুক্ত করেছে।
প্রণীত বিধিমালায় যেসব বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলোর উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এর মধ্যে রয়েছে-
* এফবিসিসিআই এর সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ সকল পরিচালকরা সাধারণ পরিষদের সদস্যদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন।
* পরিচালনা পর্ষদের আকার হবে ৪৬ জনের। চেম্বার গ্রুপ হতে ১৫ জন এবং এসোসিয়েশন গ্রুপ হতে ১৫ জন স্ব-স্ব গ্রুপ হতে পরিচালক নির্বাচিত হবেন। একটি মহিলা চেম্বার সহ ৬টি চেম্বার প্রতিনিধি এবং একটি মহিলা এসোসিয়েশনসহ ৬টি এসোসিয়েশন প্রতিনিধি বিনিয়োগের পরিমাণ, কর্মসংস্থান ও বার্ষিক প্রদত্ত রাজস্ব বিবেচনায় এফবিসিসিআই’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হবেন।
* এফবিসিসিআইসহ সকল বাণিজ্য সংগঠনে পরপর দুই (২) বার পরিচালক নির্বাচিত হলে বাধ্যতামুলকভাবে এক (১) বার বিরতি প্রদান করতে হবে।
* সকল বাণিজ্য সংগঠনের (চেম্বার এবং এসোসিয়েশন) সভাপতি পদাধিকার বলে এফবিসিসিআই এর সাধারণ পরিষদের সদস্য হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে সাড়ে ৩ কোটি ব্যবসায়ীদের প্রিয় সংগঠন এফবিসিসিআই এর সাধারণ পরিষদ সদস্যরা একটি অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সুযোগ্য নেতৃত্ব তৈরী করবেন, যারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষরনে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবেন।