Thursday 22 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি কাজে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের মজুরি হার বাড়ছে


২২ মে ২০২৫ ১৮:০৩ | আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ১৮:৪৩

-ছবি : প্রতীকী (সংগৃহীত)

ঢাকা: দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িকভাবে নিয়োজিত শ্রমিকের মজুরির হার ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। নতুন এ মজুরি হার আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। একই সঙ্গে ওইদিন থেকে ইতোপূর্বে মজুরি সংক্রান্ত জারিকৃত আদেশ বা পরিপত্রগুলো বাতিল বলে গণ্য হবে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত নতুন পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ এর আওতায় শ্রমিকের মজুরি পুনঃনির্ধারণ’ শীর্ষক পরিপত্রে এলাকা বা স্থান ভেদে তিন ক্যাটাগরিতে দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

পরিপত্র অনুযায়ী, আগামী ১ জলাই থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িকভাবে নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরির হার হবে দৈনিক ৮০০ টাকা। বর্তমানে এ মজুরির হার হচ্ছে- নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০০ টাকা এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫৭৫ টাকা।

বিভাগীয় শহর এবং অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকার ক্ষেত্রে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িকভাবে নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরির হার হবে দৈনিক ৭৫০ টাকা। বর্তমানে এ মজুরির হার হচ্ছে- নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৬০০ টাকা এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫৫০ টাকা।

এছাড়া জেলা ও উপজেলা এলাকার ক্ষেত্রে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িকভাবে নিয়মিত দক্ষ ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরির হার হবে দৈনিক ৭০০ টাকা। বর্তমানে এ মজুরির হার হচ্ছে- নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫৫০ টাকা এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

মজুরি হার পুনঃনির্ধারণের পাশাপাশি পরিপত্রে আবশ্যিকভাবে পালনীয় ৫টি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োগ, মজুরি প্রদান ও উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করা;
শ্রমিকের সংখ্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়া;
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদফতর/পরিদফতর/সংস্থার অনুকূলে বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে;
উল্লেখিত দৈনিক মজুরির হারে মাসিক ভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না এবং
এ বিষয়ে কেনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি ধরণের অত্যাবশ্যক কাজ সম্পাদনে গত এপ্রিলে ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, শুধুমাত্র দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সাময়িকভাবে এ ধরণের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে, যারা সাময়িক ধরণের কাজের জন্য নিয়োজিত হবেন। এ জন্য কোনো ধরণের পদ সৃজন করা যাবে না এবং এ ধরণের শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিয়োজিত রাখা যাবে না।

‘সাময়িক কাজ’ এর সংজ্ঞায় নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি ধরণের অত্যাবশ্যক কাজ বোঝাবে- যা সময়ে সময়ে প্রয়োজন হয়, কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান জনবল দ্বারা সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত শূন্য পদ/নিয়মিত পদ/জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেডভুক্ত পদের বিপরীতে কাজ করার জন্য কিংবা ‘আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা’র আওতাভুক্ত সেবাসমূহের বিপরীতে দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। ব্যতিক্রম কোনো বিষয় থাকলে সেক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

নীতিমালায় বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতর/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভাগীয়/জেলা/উপজেলা পর্যায়ের অফিস প্রধানরা দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারবেন। শ্রমিক নিয়োগ ও মজুরির ক্ষেত্রে নারী, পুরুষ ও তৃতীয় লিঙ্গের মধ্যে কোনো বৈষম্য করা যাবে না। নিয়োগকৃত শ্রমিকের জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধনসহ প্রাথমিক ব্যক্তিগত তথ্যাদি ও মজুরি নিয়োজিতকরণ কর্তৃপক্ষ বা অফিস প্রধান কর্তৃক ডিজিটাল ডাটাবেজ প্রণয়ন করতে হবে। শ্রমিকের মজুরি ব্যাংক একাউন্ট কিংবা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এর মাধ্যমে প্রদান করতে হবে এবং অফিস প্রধান কর্তৃক এ সংক্রান্ত হিসাব বিবরণী পরবর্তী মাসের বিলের সঙ্গে হিসাবরক্ষণ অফিসে আবশ্যিকভাবে দাখিল ও সমন্বয় করতে হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সের মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ এ নীতিমালার আওতায় সাময়িক শ্রমিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্বিক সামাজিক আচরণ, স্বভাব-চরিত্র বিষয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি/সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভার কাউন্সিলর/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত ইতিবাচক প্রত্যয়নপত্র থাকতে হবে।

চারটি বিষয়কে এ নীতিমালার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- এ নীতিমালায় বর্ণিত শ্রমিকের সংজ্ঞা ও সংশ্লিষ্ট বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো আইন/অধ্যাদেশ বা বিধির আলোকে অন্য কোনো সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত শ্রমিকের সংজ্ঞা; ‘কোম্পানি আইন ১৯৯৪’-এর আওতায় গঠিত কোনো রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি কর্তৃক ‍নিযুক্ত শ্রমিক; ‘সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০’ এর আওতায় গঠিত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিযুক্ত শ্রমিক এবং ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬’ ও ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫’ প্রযোজ্য হয়- এমন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিযুক্ত শ্রমিক।

সারাবাংলা/আরএস

দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িকভাবে নিয়োজিত শ্রমিকের মজুরি হার বৃদ্ধি