চট্টগ্রাম ব্যুরো: সংযুক্ত আরব-আমিরাত থেকে এক কনটেইনার মাল্টা আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল আহসান করপোরেশন নামে ঢাকার মালিবাগের একটি প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পৌঁছানোর পর ৪০ ফুটের কনটেইনারটি খুলে দেখা গেল, সেখানে কিছু মাল্টা আছে ঠিকই, তবে তার সঙ্গে আনা হয়েছে সোয়া কোটি শলাকা বিদেশি সিগারেট।
মাল্টার সঙ্গে ঘোষণা ছাড়া বিদেশি সিগারেট এনে প্রতিষ্ঠানটি ৩০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
বুধবার (২১ মে) গভীর রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে সন্দেহজনক কনটেইনারটির অবস্থান শনাক্ত করে সেটি আটক করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। এরপর সেটি খুলে কার্টনগুলো তল্লাশি করতে গিয়ে ধরা পড়ে এ জালিয়াতির ঘটনা।

কন্টেইনার থেকে শনাক্ত করা সিগারেটস।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ১৯ মে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কনটেইনারটি খালাসের জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত সিএন্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের দিবা ট্রেডিং লিমিটেড কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। কিন্তু গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা রফতানিকারকের ওয়েবসাইট, কোন দেশ থেকে ঘোষিত পণ্য মাল্টা আমদানি করা হয়েছে, আমদানিকারকের গত কয়েক বছরের আমদানির রেকর্ডসহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করেন। এতে তাদের সন্দেহ হয়, কনটেইনারটিতে ঘোষণা বর্হিভূত পণ্য থাকতে পারে।
এ সন্দেহের ভিত্তিতে বুধবার রাত ২টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ে কনটেইনার খুলে কার্টন বের করে গণনা শুরু করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে গণনা শেষে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, কনটেইনারটিতে ১ হাজার ২৫০ কার্টনে ছিল লেমার ও অস্কার ব্র্যান্ডের ১ কোটি ২৫ লাখ শলাকা বিদেশি সিগারেট। এর সঙ্গে ৩৮৮ কার্টনে ৫ হাজার ৪৩২ কেজি মাল্টাও ছিল কনটেইনারে।
উল্লেখ্য সিগারেট আমদানিতে ৫৯৬ শতাংশ শুল্ককর দিতে হয়। এ হিসেবে ঘোষণা ছাড়াই সোয়া কোটি শলাকা বিদেশি সিগারেট এনে প্রায় ৩০ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে বলে কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাল্টার চালানে ঘোষণা বর্হিভূতভাবে সিগারেট এনে ৩০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করেছেন আমদানিকারক। কাস্টমসের নজরদারির কারণে এ জালিয়াতি ঠেকানো গেছে। কাস্টমস আইন অনুযায়ী তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’