ঢাকা: রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে অর্থবছরের শেষ সময়ে জাতীয় বাজেট কার্যক্রম এবং রাজস্ব আহরণ অব্যাহত রাখা এবং করদাতাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে অফিস সময়ে দফতরে উপস্থিত থেকে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর আন্দোলনরত সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জারিকৃত ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫’ কে কেন্দ্র করে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’ যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে- এর কোনো ‘যৌক্তিক কারণ নেই’- এমন দাবি করে বলা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ‘আজ (২২ মে) রাজস্ব বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত দুইজন সম্মানিত সদস্যের মধ্যস্ততায় সারাদিনব্যাপী দফায় দফায় আলোচনার এক পর্যায়ে পরিষদ নেতাদের পাঠানো সমঝোতা প্রস্তাব সম্পূর্ণ মেনে নেয়ার পরও শেষ মূহুর্তে তারা কর্মসুচী প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আগে গত ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির ৫ জন সদস্য এবং এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ১ ঘন্টার বেশী সময় ধরে সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দুইজন প্রতিনিধি, রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বিস্তারিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উপদেষ্টারা সকলের বক্তব্য ধৈর্য্য সহকারে শোনেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
আলোচনায় উত্থাপিত সকল বিষয় অত্যন্ত সহানুভুতির সাথে বিবেচনায় নিয়ে সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত প্রদান করেন যে, “রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটিসহ সকল অংশীজনের সাথে বিশদ আলোচনাক্রমে জারীকৃত অধাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনার পর উক্ত অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এমন ফলপ্রসু আলোচনার পর যে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে তা মেনে না নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ পুনরায় অসহযোগ আন্দোলনের যে কর্মসূচী ঘোষণা করেছে- তার কোন যৌক্তিক কারণ নেই।’
অধ্যাদেশটি জারী করার পর তা বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ যেমন, দুইটি বিভাগের নতুন করে সাংগঠনিক কাঠামো প্রণয়ন করত: পদ সৃজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ, বাস্তবায়ন অনুবিভাগ, সচিব কমিটি কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন ইত্যাদি সম্পাদন করতে হবে-যা যথেষ্ঠ সময়সাপেক্ষ বিষয়। তাছাড়া, দুইটি নতুন বিভাগের জন্য ‘অ্যালোকেশন অব বিজনেস’ এবং আয়কর আইন, কাস্টমস আইন, মূল্য সংযোজন আইন এবং এসকল আইনের সাথে সম্পৃক্ত বিধি ও প্রবিধানেও পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হবে। এ কাজগুলোও সময়সাপেক্ষ কাজ।
যেহেতু এই কাজগুলো সম্পাদন না করে কোনভাবে অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এখনি বিলুপ্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
এ প্রেক্ষিতে আবারো জানানো যাচ্ছে যে, যেহেতু অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বাস্তবায়ন করার কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ, সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ বিদ্যমান ব্যবস্থায় সকল কার্যক্রম সম্পাদন করবেন;
বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারী) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষূন্ন রেখে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কিভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সকল অংশীজনদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে;
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় অব্যাহত থাকবে;
কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যগণের কোন পদ-পদবি কমানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই বরং সংস্কার কাজ সম্পাদন হলে তাদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগ আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।