ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা শুধু একটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নয়, এটি সমাজের সামগ্রিক অগ্রগতির পথে বড় বাধা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘হার ডিগনিটি, হার রাইটস: ইউনাইট ফর স্টপিং ভায়োলেন্স উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন’ শীর্ষক জাতীয় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা, দ্রুত বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা ও অভিযুক্তদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘নারীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় আমাদের পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও রাষ্ট্রীয় নীতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে।’ তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর আইন প্রয়োগ ও প্রতিরোধমূলক শিক্ষা কর্মসূচি বিস্তারের ওপর জোর দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি সমাজ তখনই টেকসই উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যেতে পারে, যখন সেখানে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। সহিংসতার শিকার হয়ে তারা শুধু শারীরিক নয়, মানসিক ও সামাজিকভাবেও চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এর প্রভাব পড়ে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রজুড়ে।’
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র এবং প্রশাসনিক প্রতিটি স্তরে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। তাই আমাদের বিচারপ্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য করতে হবে। পাশাপাশি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে নারীর প্রতি সহিংসতাকে আর গোপন রাখা না হয়, বরং প্রতিরোধ করা হয়।’
সভায় উপস্থিত অন্যান্য বক্তারাও বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে না পারলে একটি উন্নয়নশীল জাতি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে না। সম্মিলিতভাবে এগিয়ে এলে সহিংসতা রোধ করা সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, অধিকার ও উন্নয়ন কর্মী খুশি কবির প্রমুখ।
ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভাটি পরিচালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।