Friday 23 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জোয়ারের পানিতে ভেসে গেল শতাধিক গরু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ মে ২০২৫ ০২:২২

মুন্সীগঞ্জে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে শতাধিক গরু। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ: জেলার গজারিয়ার উপজেলার ভাটি বলাকী গ্রামসংলগ্ন খালে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে শতাধিক গরু। বর্তমানে একের পর এক মরা গরু ভেসে উঠছে। এতে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। ভুক্তভোগীদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে ওই গ্রামের পরিবেশ।

শুক্রবার (২৩ মে) বিকেল ৪টার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভাটি বলাকী গ্রামসংলগ্ন খালে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক কোটি ২৫ লাখ টাকার মত আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের তথ্যানুযায়ী, কৃষক মহসিনের চারটি, নাহিদের তিনটি, ইয়ানূরের তিনটি, এমার দু’টি, মাসুমের একটি, আবুল হোসেনের তিনটি, শাহজালালের তিনটি, কবির হোসেন খানের তিনটি, শরিফ শরিফ হোসেনের তিনটি, তরিকুল ইসলামের দু’টি সহ শতাধিক গরু পানির তোড়ে ভেসে যায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল খান বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের গ্রামবাসীর জন্য একটি দুঃখের দিন হয়ে থাকবে। আমাদের গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সবারই গরু আছে। ভাটি বলাকী গ্রামসংলগ্ন চরে ঘাস খাইয়ে গরুগুলো লালন-পালন করে সবাই। গ্রাম এবং চরের মধ্যে ছোট একটি খাল রয়েছে। খাল পাড়ি দিয়ে চরে গিয়ে ঘাস খেয়ে প্রতিদিন বিকেলে গরুগুলো আবার গোয়ালে ফিরে আসে। শুক্রবার (২৩ মে) বিকেলে খাল পাড় হওয়ার সময় হঠাৎ জোয়ারের পানির তোড়ে এবং কচুরিপানার চাপে শতাধিক গরু ভেসে যায়।’

ওইদিন বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৪১টি মৃত গরু উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো প্রায় ৬০টির মত গরু নিখোঁজ। ভুক্তভোগী কৃষক মহসিন বলেন, ‘এমন ঘটনা জীবনেও ঘটে নাই। এমন কিছু ঘটতে পারে, তা আমরা চিন্তাও করি নাই। আমার চারটি গরু পানির তোড়ে ভেসে গেছে। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি, পথের ফকির হয়ে গেছি।’

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী আবু তালেব সুজন খান বলেন, ‘ভাটি বলাকী গ্রামের ২৫/৩০টি পরিবারের ৫ শতাধিক গরু আছে। গরুগুলো গ্রামের পার্শ্ববর্তী চরে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঘাস খেয়ে চর থেকে গ্রামের দিকে ফেরার পথে তীব্র স্রোতে শতাধিক গরু পানির স্রোতে ভেসে যায়। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৫০টির মতো মৃত গরু উদ্ধার করা হয়েছে।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নেয়ামূল হক বলেন, ‘দেখলাম কচুরিপানার চাপে ও জোয়ারের পানির তোড়ে একের পর এক গরু ভেসে যাচ্ছে। এরকম অদ্ভুত ঘটনা কখনো দেখিনি আমরা।’

হোসেন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠু বলেন, ‘এরকম একটি খবর আমিও পেয়েছি। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.ফয়সাল আরাফাত বিন ছিদ্দিক বলেন, ‘বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে রয়েছি আমরা। আমাদের অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা তাদের সাহায্য করব।’

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে শতাধিক গরু ভেসে যাওয়ার খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব আমরা সহায়তা করব।’

সারাবাংলা/পিটিএম

জোয়ার টপ নিউজ পানি ভেসে গেছে মুন্সীগঞ্জ শতাধিক গরু