Saturday 24 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হারিয়ে যাওয়া এক সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী পম্পেই

ইতালি থেকে ইসমাইল হোসেন স্বপন
২৪ মে ২০২৫ ০৮:০৩

হারিয়ে যাওয়া এক সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী পম্পেই। ছবি: সংগৃহীত

ইতালি: ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির পাদদেশের প্রাচীন নগরীর মৃত্যু আর ইতিহাসের গল্প পম্পেই। আজও যা দাঁড়িয়ে আছে এক হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার নিঃশব্দ সাক্ষী হয়ে।

ইতালির ক্যাম্পানিয়া প্রদেশের নেপলস শহরের অদূরে একসময় ছিল এক সমৃদ্ধ নগর পম্পেই। ভূ-মধ্যসাগরের উপকূলে গড়ে ওঠা এই শহর ছিল প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের বাণিজ্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্র। কিন্তু ৭৯ খ্রিস্টাব্দে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ভয়াবহ এক আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত পুরো শহরটিকে গ্রাস করে নেয়।

বিজ্ঞাপন
ভূ-মধ্যসাগরের উপকূলে গড়ে ওঠা এই শহর ছিল প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের বাণিজ্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

ভূ-মধ্যসাগরের উপকূলে গড়ে ওঠা এই শহর ছিল প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের বাণিজ্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

পম্পেই ছিল প্রাচীন রোমান সমাজ ব্যবস্থার উজ্জ্বল প্রতিচ্ছবি। সুবিন্যস্ত রাস্তা, বাগানবাড়ি, থিয়েটার, পাবলিক বাথহাউস, মন্দির, বাজার এমনকি সবকিছুতেই ছিল রোমান স্থাপত্যের নিখুঁত ছাপ। দেয়ালে আঁকা চিত্রে ফুটে উঠতো সমাজের সংস্কৃতি ও জনজীবনের নানা গল্প।

বর্তমানে পম্পেই শুধুই একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নয়, এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত পাঠশালা। সংগৃহীত

বর্তমানে পম্পেই শুধুই একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নয়, এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত পাঠশালা। সংগৃহীত

৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির ভয়ংকর বিস্ফোরণে মুহূর্তেই লাভা, ছাই ও বিষাক্ত গ্যাসে ঢেকে যায় গোটা শহর। হাজার হাজার মানুষ সেদিন প্রাণ হারান, অনেকেই ঘরবাড়ি ও রাস্তায় থেমে যান চিরদিনের জন্য। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের বাণিজ্য ও সংস্কৃতি কেন্দ্রটি ছাইয়ে ঢাকা পড়ে প্রায় ১৭০০ বছরের জন্য।

অবাক করা বিষয় হলো এখনো সংরক্ষিত আছে মানুষের শেষ মুহূর্তের ভঙ্গিমাও। ছবি: সংগৃহীত

অবাক করা বিষয় হলো এখনো সংরক্ষিত আছে মানুষের শেষ মুহূর্তের ভঙ্গিমাও। ছবি: সংগৃহীত

১৭৪৮ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে পম্পেই ফের উঠে আসে পৃথিবীর আলোয়। অবাক করা বিষয় হলো তখনো সংরক্ষিত ছিল দেয়ালচিত্র, বাসগৃহ, এমনকি মানুষের শেষ মুহূর্তের ভঙ্গিমাও। পম্পেই’র খনন কাজ আজও চলছে। আর প্রতিটি আবিষ্কার আমাদের নিয়ে যাচ্ছে অতীতের রোমান জীবনের গভীরে।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে পম্পেই শুধুই একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নয়, এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত পাঠশালা। পাথরের ঘর, মন্দির, থিয়েটার আর সরু গলিপথ যেন কানে কানে বলে যায় প্রাচীন রোমানদের গল্প। প্রতিবছর লক্ষাধিক পর্যটক এই শহরে ভিড় করেন ইতিহাসকে স্পর্শ করতে। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো পম্পেইকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।

অবাক করা বিষয় হলো এখনো সংরক্ষিত আছে মানুষের শেষ মুহূর্তের ভঙ্গিমাও। ছবি: সংগৃহীত

অবাক করা বিষয় হলো এখনো সংরক্ষিত আছে মানুষের শেষ মুহূর্তের ভঙ্গিমাও। ছবি: সংগৃহীত

যদিও এখন পম্পেই উপকূল থেকে অনেকটা দূরে, কিন্তু প্রাচীনকালে এটি ছিল সাগরঘেঁষা এক শহর। সময়ের সঙ্গে সমুদ্র সরে গেছে, কিন্তু পম্পেই তার ইতিহাস হারায়নি। বরং আজও এটি দাঁড়িয়ে আছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এক নিদর্শন ও সভ্যতার অমূল্য চিহ্ন হয়ে।

সারাবাংলা/পিটিএম

অগ্নুৎপাত নিঃশব্দ সাক্ষী পম্পেই ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরি সভ্যতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর