Saturday 24 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৪ মে ২০২৫ ১৩:২৩ | আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ১৪:২৭

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বন্ধ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন আদালত। ফলে বিশ্বের ৩৯৮ বছরের পুরোনো অন্যতম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তির ক্ষেত্রে আবারও সুসংবাদ পেলেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৩ মে) এই সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত করেছে মার্কিন আদালত। হার্ভার্ড প্রশাসন ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন। হার্ভার্ডের অভিযোগ, ট্রাম্পের এই নীতি তার বৃহত্তর চক্রান্তের অংশ। কারণ হার্ভার্ড তাদের ‘শিক্ষার স্বাধীনতা’ বিসর্জন দিতে রাজি না। এর পরপরই আদালত ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত করে দেন।

বিজ্ঞাপন

ট্রাম্পের ওই নীতিকে মার্কিন সংবিধান ও অন্যান্য ফেডারেল আইনের ‘প্রকাশ্য লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন আদালতের এই আদেশের ফলে হাজার হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন। এই আদেশ বলবৎ থাকলে তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যেতে হতো। এতে প্রায় সাত হাজারের বেশি ভিসাধারীর ওপর কঠিন প্রভাব পড়বে।

শুক্রবার বোস্টন ফেডারেল আদালতে দায়ের করা মামলায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছাড়া হার্ভার্ড, হার্ভার্ড নয়। বর্তমান শিক্ষাবর্ষে হার্ভার্ডে প্রায় ছয় হাজার ৮০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আছেন, যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ।’

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এক চিঠিতে বলেছেন, ‘আমরা এই বেআইনি ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই। সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে হার্ভার্ডকে শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে। কারণ আমরা আমাদের একাডেমিক স্বাধীনতা বিসর্জন দিতে রাজি হইনি।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের আদেশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। মামলার একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ’ (ডিএইচএস) জানায়, তারা হার্ভার্ডের শিক্ষার্থী ভিসা কর্মসূচির অ্যাকসেস বাতিল করছে। এই কর্মসূচির আওতায়ই বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে পারেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদিবিরোধিতার বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি এবং নিয়োগ ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় সংস্কার আনেনি। তবে এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

হার্ভার্ড মামলায় বলেছে, ‘কলমের এক খোঁচায় সরকার আমাদের ছাত্রসংখ্যার এক-চতুর্থাংশকে মুছে ফেলতে চেয়েছে। অথচ এই শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।’

বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের কাছে আবেদন করেছে, যাতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়। এই সিদ্ধান্তেই হার্ভার্ডের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম সার্টিফিকেশন বাতিল করা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড ছাড়াও আরও কয়েকটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেটে রেখেছে। তারা দাবি করেছে, এসব প্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনপন্থী কর্মীদের দমন ও রক্ষণশীল মতামতের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে। এছাড়া দেশজুড়ে ডজনখানেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা কিছু ছাড়ও আদায় করে নিয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে হোয়াইট হাউস হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অর্থায়ন স্থগিত করে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয়টির করছাড় সুবিধা বাতিলেরও হুমকি দেন।

সারাবাংলা/এসডব্লিউ

ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থী মার্কিন আদালত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর