ঢাকা: বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করাসহ ৫টি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ১৮৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এছাড়া ৪ হাজার ৬৪৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে চলমান মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের ৮ম ধাপের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সব মিলিয়ে মোট ব্যয় হবে ১১ হাজার ৮৩০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ৮ হাজার ৪৬ কোটি ৯ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারীর সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ৮১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং অবশিষ্ট ২ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা হচ্ছে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান।
শনিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদসহ বৈঠকে অন্যান্য উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত নতুন ৫টি প্রকল্প হচ্ছে-
‘পাওয়ার ট্রান্সমিশন স্ট্রেংদেনিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন অব রিনিউয়েবল এনার্জি’ প্রকল্প। পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ পিএলসি কর্তৃক বাস্তবায়িতব্য এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৩১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৫৬ কোটি টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে ৬৩৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প ঋণ রয়েছে ২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০৩০ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে।
‘গ্রিড পাওয়ার ইভাকুয়েশন সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট ফর ওজোপাডিকো’ প্রকল্প। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) কর্তৃক বাস্তবায়িতব্য এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ৩৫৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে ১৮০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৮ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে।
‘আরবান ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার’ (ইউসিআরআইপি) প্রকল্প। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবায়িতব্য এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের অর্থায়নের পরিমাণ হচ্ছে ২০৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৩৮৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা প্রকল্প ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে।
পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি ২০২৯ সালের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
‘১৫টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে গৃহীত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িতব্য তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়ে ২০২৭ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে।
‘কারিগরি শিক্ষা অদিফতরের আওতাধীন ৮টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প। কারিগরি শিক্ষা অদিফতর কর্তৃক সস্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়িতব্য এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫১ কোটি ৭ লাখ টাকা। দুই বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি ২০২৬ সালের জুন নাগাদ শেষ হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় জানায়, অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে ইতোপূর্বে একনেকে অনুমোদিত তিনটি প্রকল্পের সংশোধিত প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট : রেইনটিগ্রেশন অব রিটার্নিং মাইগ্রেন্ট’ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পে ৯১ কোটি টাকা এবং ‘প্রবৃদ্ধি : লোকাল ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট’ (১ম সংশোধিত) প্রকল্পের ব্যয় ৭২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বেড়েছে। একইসঙ্গে প্রকল্পটির মেয়াদকাল তথা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।
অন্যদিকে ‘তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মানোন্ননের লক্ষ্যে নির্বাচিত বেসরকারি কলেজগুলোর উন্নয়ন প্রকল্প’ (৩য় সংশোধন) এর ব্যয় ১৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা কমেছে। তবে ব্যয় কমলেও তিন দফা সংশোধনে প্রকল্পটির মেয়াদ ধাপে ধাপে মোট ৯ বছর বাড়ানো হয়েছে।