ঢাকা: নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপনের বিষয়ে দুদকের চিঠি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ইসির আইন শাখার মতামত চাওয়া হয়েছে। তাদের মতামত পেলে বিষয়টি পর্যালোচনা শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। দুই-তিন দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে মতামত দেবে নির্বাচন কমিশনের আইন শাখা।
শনিবার (২৪ মে) গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুদক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানান, ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগে ইসিতে দাখিল করা হলফনামায় নিজের নামে থাকা কৃষিজমির পরিমাণ ৬ দশমিক ৫০ একর এবং ওই জমির মূল্য ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দেখান। অথচ দুদকে জমা দেওয়া তার সম্পদ বিবরণীতে দেখা যায়, শেখ হাসিনার নামে ২৮ দশমিক ৪১১ একর জমি রয়েছে, যার মধ্যে ক্রয়কৃত জমির মূল্য ৩৩ লাখ ৬৬ হাজার ১০ টাকা।
সে হিসাবে হলফনামায় ২১ দশমিক ৯১ একর জমির তথ্য গোপন করেছেন তিনি এবং জমির মূল্যের ক্ষেত্রে ৩১ লাখ ১১ হাজার ১০ টাকা কম দেখিয়েছেন।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, শেখ হাসিনা তৎকালীন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ সিরাজুল আকবরের শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বেনামে ২ লাখ ৩০ হাজার ইউরো মূল্যে একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি আমদানি করেন। এলসির বিপরীতে ওই গাড়ির মূল্য বাবদ ব্যাংক থেকে পরিশোধ করা হয় ১ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। গাড়িটি শেখ হাসিনা ‘সুধা সদন’, বাড়ি ৫৪, রোড ৫, ধানমন্ডি, ঢাকা ঠিকানা ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৬৩৬৪) করেন এবং তা নিজেই ব্যবহার করেন।
তবে প্রফেসর সিরাজুল আকবরের আয়কর নথি ও তার হলফনামায় এ গাড়ি সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই এবং তিনি এটি কখনো ব্যবহারও করেননি বলে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর আওতায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়ার অভিযোগে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।