গাজায় আরও তীব্র বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে খান ইউনিসে আলা আল নাজ্জার নামে এক নারী চিকিৎসকের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
শুক্রবার (২৪ মে) গাজার খান ইউনিসে চালানো এই বর্বর হামলায় মুহূর্তেই ভেঙে চুরমার হয়ে যায় একটি গোটা পরিবার।
আলজারিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মা আলা আল নাজার নামের ওই নারী চিকিৎসক গাজার নাসের হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামীও একজন চিকিৎসক। ঘটনার সময় তিনি স্ত্রীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়িতে প্রবেশের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাদের বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় চিকিৎসক আলা আল নাজারের ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই প্রাণ হারায়। তাদের নাম সিদার, লুকমান, সাদিন, রেভাল, রুসলান, জুবরান, ইভ, রাকান এবং ইয়াহিয়া। আহত হয় ১১ বছর বয়সী আরেক সন্তান।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা দুই শিশু, যাদের মধ্যে দুইজন নিহত। বাকীদের বয়স সাত মাস থেকে ১২ বছর।
আল-ফারা আল জাজিরাকে বলেন, আল-নাজ্জারের স্বামী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন। তার বুকে এবং মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। যার মধ্যে একটি মাথার খুলি ভেঙে গেছে এবং তিনি এখন নাসের হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে চিকিৎসাধীন।
আল-ফারা বলেন, আমাদের মাত্র একজন সন্তান জীবিত আছে। ১১ বছর বয়সী আদমও গুরুতর আহত। বর্তমানে সে তার মায়ের সঙ্গে আইসিইউ বিভাগে রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক ড. মুনির আলবোরস জানান, হামলার সময় পরিবারটি তাদের নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিল। হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল একটি বেসামরিক পরিবার, যেখানে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা যোদ্ধার উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি।
ব্রিটিশ চিকিৎসক গ্রাহাম গ্রুমও এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলেন, চিকিৎসক দম্পতির কেউই রাজনীতি বা হামাসের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এমনকি তারা সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখিও করতেন না।
শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয় ৭০ জনেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে আলা আল নাজারের ৯ সন্তানও রয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করে, তারা হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। কিন্তু বাস্তবে হামলার বলি হচ্ছে অসংখ্য নিরীহ ফিলিস্তিনি। প্রতিদিনের মতোই এদিনও গাজার সাধারণ মানুষের ওপর নেমে আসে মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞের নতুন অধ্যায়।