ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছি তা জানানোর পাশাপাশি স্বচ্ছতার জন্য যে বিষয়ে সমঝোতা হয়নি তাও জনগণকে অবহিত করা হবে।
রোববার (২৫ মে) কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি তুলে ধরে আলী রীয়াজ জানান, সেখানে দলগতভাবে কিছু বিষয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয়ে যখন ঐক্যমত হয়েছে, তবে কিছু মৌলিক বিষয় এখনও তৈরি হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক আদর্শিক অবস্থানের কারণে মতপার্থক্য থাকবে, সব বিষয়ে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, এটা হচ্ছে বাস্তব।
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি আমরা নাগরিক সমাজের চিন্তাভাবনাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে আজকে আমরা এখানে আপনাদেরকে আমন্ত্রন জানিয়েছি। এই আলোচনার উদ্দেশ্য আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনাদের পরামর্শ নেওয়া।’
আলী রীয়াজ জানান, ঐকমত্য কমিশন চেষ্টা করবে যে জাতীয় সনদ তৈরি হচ্ছে তার পাশাপাশি যে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে সেখানে যেন সব মতামতগুলো থাকে।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার গুরুত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, জাতীয় ঐকমত্য গঠনে মাত্র রাজনৈতিক দলগুলোতে আলোচনায় যথেষ্ট নয়, নাগরিক সমাজের মধ্যেও এ বিষয়ে এক ধরনের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা দরকার। তাই নাগরিক সমাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ সংস্কার কর্মসূচির বাদ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে গঠিত হওয়ার পর থেকে নির্ধারিত সময় দেওয়া হয়েছে ছয় মাস। সেই ছয় মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে আমরা উপস্থিত। এই সময়ে আমরা বিভিন্নভাবেই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ করা ছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার সংক্ষেপ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে যোগাযোগ করেছি। দলগুলো তাদের মতামত দিয়েছেন। তাদের প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটা মাহেন্দ্রক্ষনে দাঁড়িয়ে আছি। সম্ভাবনা তৈরি করেছি কিন্তু যে কোনো সম্ভাবনা যেমন চ্যালেঞ্জ তৈরি করে এই পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলি অত্যন্ত কঠিন।’
তিনি জানান, ৫৩ বছরের ধরে যে চেষ্টা সেই চেষ্টার পাশাপাশি গত ১৬ বছর ধরে যে সংগ্রাম সর্বোপরি জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রক্তপাত, প্রাণনাশ, মানুষের আত্মদান সেগুলোর কাছে তাদের দায় আছে।
‘আমাদের সেই দায়িত্বের জায়গা থেকেই আমরা আশা করি যে সবাই তাদের নিজস্ব জায়গা থেকে এই কাঠামোগত পরিবর্তনগুলো যতটা অর্জন করা সম্ভব, ততটা সক্রিয় থাকবে। সেই আশা থেকেই আমাদের এই আলোচনা। আশা করি যে আপনাদের মতামত আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করবে।’
এ আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এছাড়া সুশীল সমাজের বেশ কয়েকজন প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।