ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করাটা সরকারের অগ্রাধিকার ছিল উল্লেখ করে অন্তরবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শফিকুল আলম বলেছেন, আমাদের রাজস্ব আদায় সব সময় কম ছিল। এর কারণ আমরা প্রচুর কর ছাড় দিয়েছি এবং কর আদায়ের সিস্টেমটা খুব অদক্ষ ছিল।
তিনি বলেন, সরকার এ জায়গাটায় খুব ফোকাস দিয়েছেন। সে আলোকেই এনবিআরকে দুই ভাগ করা হয়েছে। এর ফলে আমরা মনে করি, রাজস্ব আদায় বাড়বে।
রোববার (২৫ মে) পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিএমজেএফ সভাপতি গোলাম সামদানী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।

ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি: সারাবাংলা
শফিকুল আলম বলেন, পুরো ওয়ার্ল্ডের এখন ট্রেডের যে একটা প্রটেকশনিজম চলছে গ্লোবাল ট্রেডে, সেই জায়গায় আমরা একটা বেনিফিটের জায়গায় আছি। আমরা খুব দ্রুত এটা থেকে বেনিফিট পেতে পারি। যেমন- বড় বড় দেশ একে অপরের বিপরীতে ট্যারিফ ইম্পোজ করছে। এই ট্যারিফ ইম্পোজ করার কারণে যে ফ্যাক্টরিগুলো হচ্ছে লো কস্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাক্টরি, তারা আসলে খুঁজছে যে, তারা কোন দেশে গেলে তাদের এই ধরনের ট্যারিফ ফেস করতে হবে না। কোন দেশে গেলে লেবারটা লো কস্টে করতে পারবে। তো বাংলাদেশের চেয়ে বেটার ডেস্টিনেশন পুরো বিশ্বে এখন নাই। তো সেই আলোকেই আমাদের চিফ এডভাইজার চাচ্ছিলেন বাংলাদেশকে একটা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব তৈরি করা।
তিনি বলেন, ম্যানুফ্যাকচারিং হাব তৈরি করার মূল শর্ত হচ্ছে- বন্দরের দক্ষতা বাড়াতে হবে। বন্দরের দক্ষতা অন্যমাত্রায় নিতে হবে। তো এই অন্য মাত্রায় নেওয়ার প্রযুক্তি আমাদের নাই। ওই ম্যানেজমেন্ট স্কিলটাও আমাদের তৈরি হয়নি। এটার জন্য আমরা বিদেশের সবচেয়ে বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে কথা বলছি। দুবাই পোর্ট ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কথা বলছি। এপি মূলার মার্কসের সঙ্গে কথা বলছি এবং সিঙ্গাপুরের পোর্ট অফ সিঙ্গাপুর অথরিটির সঙ্গে কথা বলছি। তারা যদি পোর্ট চালায়, তাহলে আমাদের পোর্ট এফিশিয়েন্সি বাড়বে। আর পোর্ট এফিশিয়েন্সির দিকে তাকিয়ে থাকে ওয়ার্ল্ডের বড় বড় কোম্পানিগুলো- যারা ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ইনভেস্ট করে, তারা তখন চিন্তা করবে যে, ওকে দিস ইজ হাই টাইম টু ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ।
বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে পারলে পুঁজিবাজারেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে- এমন মন্তব্য করে শফিকুল আলম বলেন, এফডিআই আমরা যদি প্রচুর আনতে পারি, আর সামষ্টিক অর্থনীতি ঠিক থাকে, তাহলে আমরা মনে করছি যে, এটার প্রভাব ক্যাপিটাল মার্কেটেও পড়বে। ক্যাপিটাল মার্কেট গ্রো করতে বাধ্য।
তিনি বলেন, আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে মূল্যস্ফীতি কমানো। এটা আমাদের একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা সুদের হার বাড়াতে বাড়াতে এখন বোধহয় ১০ শতাংশের বেশি, ওটা করার পরে আমরা দেখছি যে, মূল্যস্ফীতি কমা শুরু হয়েছে। আমাদের আশা, যেটা আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, এই বছরের শেষে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশেরে নিচে আনবে।
তিনি বলেন, এফডিআই আসা শুরু হয়েছে। চীনের একজন কমার্স মিনিস্টারের নেতৃত্ব জুনে ১৫০ জনের মতো চাইনিজ ইনভেস্টর দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। চাইনিজরা যদি বাংলাদেশে আসে, আমরা যে জব গ্রোথটা চাচ্ছি, সেটা খুব দ্রুত হবে।