হলি আর্টিজানের চার্জশিট ১০ দিনের মধ্যে: ডিএমপি কমিশনার
২৮ জুন ২০১৮ ১৬:২৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে হলি আর্টিজানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে ডিএমপি হেড কোয়ার্টারে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। আমরা আশা করছি, আগামী এক সপ্তাহ অথবা ১০ দিনের মধ্যে এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে পারব। এখানে বলে রাখি, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটির তদন্ত করেছি।
“হামলার বিভিন্ন পর্যায়ে যাদের সংশ্লিষ্টতা ছিল, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ চেষ্টা করে যাচ্ছে। যে মামলা হয়েছে, সেই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কাউন্টার টেরোরিজমের অফিসাররা অনেক তথ্য পেয়েছে। পরিকল্পনায় কারা ছিল, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, অস্ত্র সংগ্রহ, কোথায় থেকে অস্ত্র এসেছিল, কোথায় অস্ত্র জমা ছিল, অর্থ কারা দিয়েছিল, সেই অর্থের উৎস কী, কিভাবে অর্থ হস্তান্তর হয়েছিল, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়েছিল কে এবং ঘটনার সময় মিডিয়া প্রচার করার জন্য কারা কাজ করেছে সব চিহ্নিত করা হচ্ছে।”
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমি বলব, এটি একটি হত্যাকাণ্ড, আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের মামলাটি এতটাই ব্যাপক, এত মানুষ এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট- তা খুঁজে বের করা এবং প্রমাণ সংগ্রহ করা, কেমিক্যাল সংক্রান্ত তথ্য বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে সংগ্রহ করা- এগুলো জটিল বিষয়।
চার্জশিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মামলাটি যেহেতু তদন্তনাধীন তাই এই বিষয়ে কিছু না বলাটা সমিচীন হবে। আমরা বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করেছি। অভিযোগপত্র এমন হবে, যাতে এই ধরনের জঘন্য ঘটনায় কোনো অপরাধী ছাড় না পায়। কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন- সে বিষয়টিও আমরা খেয়ালে রেখেছি।
চিহ্নিত অপরাধীদের রাজনৈতিক পরিচয় জানা গেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা আমরা এই মুহূর্তে বলতে চাই না। যারা ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে বা জঙ্গিবাদের মাধ্যমে সহিংসতা সৃষ্টি করতে চায়- তারা কিন্তু সবাই একই আদর্শে বিশ্বাস করে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচার-প্রচারণা চলছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সব অরগান কাজ করছে।
এর আগে সোমবার (২৫ জুন) ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিন আগামী ২৬ জুলাই মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ঠিক করে দেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে কূটনৈতিক এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা হামলা করে এবং দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। অভিযানে জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। রাতের বিভিন্ন সময় তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জিম্মিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো অভিযান চালায়। এতে ছয় হামলাকারী নিহত হয়। জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জিম্মিকে।
ওই ঘটনায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা, জাপানি, ইতালি, বাংলাদেশি বংশোদ্ভতু আমেরিকানসহ ১৮ বিদেশি ও ২ বাংলাদেশি এবং ৬ জঙ্গিসহ ২৮ জন নিহত হন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের ঢাকা মহানগর কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
সারাবাংলা/ইউজে/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook