চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার ভার বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেয়ার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বন্দর ভবনের মূল ফটক দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে অবস্থান ধর্মঘট করেছে চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা পরিষদ ও বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। এ প্রক্রিয়া বন্ধ না হলে সড়ক অবরোধ এবং ঈদুল আজহার পর বন্দর শাটডাউনের মতো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন নেতারা।
রোববার (২৫ মে) সকাল ১০টায় বন্দর ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়ে শেষ হয় বেলা ১২টায়। এতে অংশগ্রহণকারীরা ‘এনসিটি বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে’, ‘ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে বন্দর পরিচালনা চাই না’, ‘বিদেশি নয়, দেশীয় অপারেটরই যথেষ্ট’-এমন নানা স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচির শুরুতে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক দলের সহ-সম্পাদক মোজাহের হোসেন শওকত। তিনি বলেন, ‘এনসিটি বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হলে দেশের স্বার্থ, শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ এবং বন্দরের কর্তৃত্ব তিনটিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত, যন্ত্রপাতিসহ আধুনিক টার্মিনালটি এখন সফলভাবে দেশীয় অপারেটরদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। বিদেশিদের হাতে দিলে আমরা আমাদের সম্পদ থেকে বঞ্চিত হব।’
সংগঠনটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সরকার একচেটিয়াভাবে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতে শ্রমিকদের মতামত নেওয়া হয়নি। এমনকি জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নেও কোনো গণশুনানি বা জনমত যাচাই করা হয়নি।’
সহ-সম্পাদক সানোয়ার মিয়া বলেন, ‘এই টার্মিনাল এখন আয়বর্ধক ইউনিট হিসেবে পরিচিত। এখানে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি রয়েছে এবং দক্ষ দেশীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। তারপরও বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজনীয়তা আসলে কার স্বার্থে?’
কর্মসূচিতে আন্দোলনকারী নেতারা আরও বলেন, বিদেশি অপারেটর এলে দেশের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়ে যাবে। অনেক দেশীয় অপারেটর ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি বন্দরের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণও হারিয়ে যাবে। তাই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তারা।
দাবি না মানলে আগামীতে বন্দর ঘেরাও, ধর্মঘট এবং বিভাগীয় সমাবেশসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তারা।