রাশিয়ার রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে, বিশেষ করে রাজধানী কিয়েভে, একযোগে ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
শুক্রবার (২৩ মে) রাতে চালানো এই হামলাটি এখন পর্যন্ত চলমান যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা, যেখানে অন্তত ১২ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমেরিকার নীরবতা এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের নীরবতা পুতিনকে আরও উৎসাহিত করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ার প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলাই তাদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের যথেষ্ট কারণ।’
এই হামলাটি বিগত সকল হামলার সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড়, যদিও অতীতে কিছু হামলায় আরও বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগর ক্লাইমেঙ্কো জানান, হামলায় ১২ জন নিহত এবং ৬০ জন আহত হয়েছেন। যদিও আগের প্রতিবেদনগুলোতে মৃতের সংখ্যা ১৩ বলা হয়েছিল।
ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্ররা যুদ্ধের অবসানে প্রথম ধাপে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য মস্কোর ওপর চাপ দিচ্ছে। তবে এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানায়, রাশিয়া রাতভর ২৯৮টি ড্রোন এবং ৬৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে ২৬৬টি ড্রোন এবং ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে।
হামলার ক্ষতি ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, দক্ষিণের মাইকোলাইভ ও পশ্চিমাঞ্চলের টারনোপিল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। কিয়েভে শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তাচেঙ্কো জানান, ড্রোন হামলায় ১১ জন আহত হয়েছেন, তবে রাজধানীতে কেউ মারা যায়নি। রাজধানীর আশেপাশে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছেন।
এটি ছিল টানা দ্বিতীয় দিনের বড় আকাশ হামলা। এর আগের শুক্রবার রাতেও রাশিয়া ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছিল।
উত্তর-পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ শহরে মেয়র ইগর তেরেখভ জানান, ড্রোন তিনটি এলাকায় আঘাত হানে এবং ৩ জন আহত হয়। দক্ষিণের মাইকোলাইভ শহরে এক ৭৭ বছর বয়সী বৃদ্ধ নিহত ও ৫ জন আহত হন বলে স্থানীয় গভর্নর জানান।
ফ্রন্টলাইন থেকে অনেক দূরের খমেলনিতস্কি অঞ্চলে চারজন নিহত এবং আরও পাঁচজন আহত হন বলে জানিয়েছেন গভর্নর।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রেই ইয়ারমাক বলেন, ‘চাপ ছাড়া কিছুই পরিবর্তন হবে না, এবং রাশিয়া ও তার মিত্ররা এমন হত্যাকাণ্ড চালানোর জন্য আরও শক্তি জড়ো করবে।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা চার ঘণ্টায় ৯৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস বা বাধা দিতে সক্ষম হয়েছে। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানান, রাজধানীর দিকে আসা ১২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করা হয়েছে।