নেত্রকোনা: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের কৃষক এলান মিয়া এবার ধানের বদলে বাদাম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। গত বছর তিনি তার ৪০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করে ২০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করেছিলেন। তবে, এ বছর একই জমিতে প্রথমবারের মতো বাদাম চাষ করে তিনি এরইমধ্যে ২০ হাজার টাকার বাদাম বিক্রি করেছেন; আরও ২০ হাজার টাকার বাদাম বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
ধানের পরিবর্তে বাদাম চাষ করে লাভবান হওয়ায় কৃষক এলান মিয়া আগামী বছর তার ৯০ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করার স্বপ্ন দেখছেন।
এলান মিয়ার বাদাম চাষের সফলতা দেখে এলাকার অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এবং আগামী বছর থেকে তারাও বাদাম চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।
কৃষক এলান মিয়া বলেন, আমার এই ৯০ শতাংশ জমিতে ধান ও পাট চাষ করে খুব একটা লাভবান হয়নি। কিন্তু এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে বাদাম চাষ করে বেশ লাভ হয়েছে। স্থানীয় বাজারে বাদামের বেশ চাহিদাও রয়েছে। জমি থেকে উঠানোর পর হালকা শুকিয়ে প্রতি কেজি বাদাম ১০০ টাকা কেজি এবং পুরোপুরি শুকনো বাদাম ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।
তিনি আরও বলেন, বাদাম চাষে খরচ কম। পরিশ্রম কম। সার ও কীটনাশকও বেশি প্রয়োগ করতে হয় না। লাভ বেশি। এছাড়া বাদাম উঠানোর পর গাছগুলোও শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
একই গ্রামের কৃষক সোহেল মিয়া বলেন, আমাদের এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক এ বছর বাদাম চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। তাই আমরাও আগামীতে বাদাম চাষ করবো।
স্থানীয় কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ূন দিলদার বলেন, বাদাম একটি লাভজনক উচ্চমূল্যের ফসল। এতে শতকরা ৪৮ থেকে ৫০ ভাগ তেল থাকে। পাশাপাশি ২৫ থেকে ২৮ ভাগ প্রোটিন থাকে। সাধারণত বেলে মাটি এবং বেলে দোঁআশ মাটিতে বাদাম ভালো হয়ে থাকে। এ জন্য আমাদের এলাকায় বাদাম চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে কৃষি পুনর্বাসন ও প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় কিছু কৃষকের মাঝে বাদামের বীজ বিতরণ করা হয়েছিল। তারা লাভবান হয়েছেন। এছাড়া আগ্রহী কৃষকদের বাদাম চাষে যেকোনো ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা কৃষি অফিস প্রদান করবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নূররুজ্জামন বলেন, জেলায় এ বছর ৪১৩ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করেছেন কৃষকরা। সবচেয়ে বেশি বাদাম চাষ হয়েছে হাওর উপজেলা খালিয়াজুরীতে। এছাড়া জেলার দুর্গাপুর, কলমাকান্দা, মোহনগঞ্জ ও কেন্দুয়াসহ বিভিন্ন উপজেলায় দিন দিনই বাদাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। আমরা বাদাম চাষীদের সব ধরণের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করে আসছি।