ঢাকা: গ্যাস সংকট চলতে থাকলে ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে উল্লেখ করে শিল্প খাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
রোববার (২৫ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল এ দাবি জানান। সংগঠনের অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শিল্প খাতে জ্বালানী বিশেষ করে গ্যাস সংকটে টেক্সটাইল এবং পোশাক শিল্পে উৎপাদন বিপর্যয়: রফতানি হ্রাস, আর্থিক সংকট ঘনিভূত, ব্যাংক ঋণ ও বেতনাদি পরিশোধ নিয়ে সংগঠনটির আশঙ্কা তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিটিএমএ’র পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- অবিলম্বে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিল্প খাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা;
শিল্পখাত ও ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোয় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি প্রতিযোগীশীল ও টেকসই মূল্য নির্ধারণ নীতিমালা প্রণয়ন করা;
শিল্প খাতে বিরাজমান গ্যাসের সংকট মোকাবেলায় জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য মধ্য-দীর্ঘমেয়াদী কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন।
লিখিত বক্তব্যে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ‘দেশের বহুল প্রচারিত জাতীয় পত্রিকায় গ্যাস সংকটের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বিজ্ঞাপন প্রদান করা হলেও অদ্যাবধি এই সংকটের কোন সমাধান হয়নি। বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএ’র অধীনের টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল পোশাক কারখানাগুলোর দেশের রফতানিতে প্রায় ৮৫ শতাংশ অবদান । গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার ক্ষেত্রে রফতানি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার প্রদান করা উচিৎ হলেও -তা করা হচ্ছে না বরং রফতানি আয়ের মূল উৎসের প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাসের অভাবে স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচলনা করতে পারছে না। অধিকাংশ টেক্সটাইল মিল এবং পোশাক কারখানায় গ্যাসের শূন্য চাপের প্রমান রয়েছে ।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘গ্যাস সরবরাহের এই অবস্থা চলতে থাকলে বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএ এর অধীনের টেক্সটাইল এবং পোশাক খাতের প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। এই সংকট চলতে থাকলে উৎপাদন কার্যক্রম ব্যহত হয়ে রফতানি কমে যাবে । ফলে রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে । সামষ্টিক অর্থনীতি মেরামতের সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করবে। নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। এতে আর্থিক সংকট ঘনিভূত হবে, ব্যাংক ঋণ এবং শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধের আশঙ্কা তৈরি হবে বিধায় উৎপাদক এবং রফতানিকারকরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন । আরও উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে নতুন কোন কর্মসংস্থান হচ্ছে না বরং কর্মরত শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা বাড়ছে।’