Tuesday 27 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৬ মে ২০২৫ ১৩:২৪ | আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১৪:৪৯

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবি সচিবালয়ে আজও সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

সোমবার (২৬ মে) তারা দুপুর ১২টার দিকে সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হোন। এরপর মিছিল করেন। এ সময় তারা সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ কালো আইন উল্লেখ করে এটি বাতিলের পাশাপাশি জনপ্রশাসন সচিবকে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানান। এদিকে সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে সকল প্রবেশ দ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২২ মে) অধ্যাদেশটির খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। এরপর থেকেই সচিবালয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ কর্মসূচি। এরপর রোববার (২৫ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হলে সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকেই উত্তপ্ত প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়।

সকাল ১১টা থেকেই সরকারি কর্মজীবীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এরপর ১২টার দিকে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো.নুরুল ইসলাম ও মহাসচিব মো. মুজাহিদুলের নেতৃত্বে কর্মকর্তা কর্মচারীরা মিছিল শুরু করেন। ৪ নম্বর ভবনের সামনে থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি ২ নম্বর ভবনের সামনে দিয়ে ৫ ও ৬ নম্বর ভবন হয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অর্থাৎ ১ নম্বর ভবনের সামনে দিয়ে নতুন ভবন ক্লিনিক ভবন হয়ে ১১ নম্বর ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তারা এক হও লড়াই কর, অবৈধ কালো আইন মানি না মানব না বলে শ্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলন প্রসঙ্গে সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা এই অধ্যাদেশ মানি না। আমরা আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ মে) ৪টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছি দাবি মেনে নেওয়ার। যদি না মেনে নেয় তাহলে কাল বিকেল থেকেই আমরা সচিবালয়ের গেটে অবস্থান করব। এই কালো আইন যারা তৈরি করেছে তাদেরকে আমরা সচিবালয়ে ঢুকতে দেব না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমরা জানি কিছু সচিব সৈরাচারি দোসরের হয়ে কাজ করছেন। এমন কতজন জড়িত তাদেরকে আমরা চিনি। আমাদের কাছে তাদের তালিকা আছে। তারা আমাদের কর্মচারীদের ডেকে নিয়ে থ্রেড করছেন।

মো. নুরুল ইসলাম আরও বলেন, অনেকেই জনপ্রশাসন সচিবের অপসারন চান। আমরা মনে করি উনি সরে গেলেই এসব ঝামেলা কমে যাবে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ আকারে প্রণয়ন করা হয়। অধ্যাদেশটিতে চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুতের বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে সরকারি কর্মচারীদের আচরন ও দণ্ড সংক্রান্ত বিশেষ বিধান শিরোনামে একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে সরকারি কোনো কর্মচারী যদি এমন কোনো কর্মকান্ডে লিপ্ত হোন, যার কারনে অন্য যেকোনো সরকারি কর্মচারীর মধ্যে আনুগত্য সৃষ্টি করে বা শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে বা কর্তব্য সম্পাদনে বাধার সৃষ্টি করে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে সমবেতভাবে বা এককভাবে ছুটি ছাড়া বা কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া নিজ কর্মে অনুপস্থিত থাকেন বা বিরত থাকেন বা কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হোন, অন্য যে কোনো কর্মচারীকে তার কর্ম থেকে অনুপস্থিত থাকতে বা বিরত থাকতে বা তার কর্তব্য পালন না করার জন্য উসকানি দেন বা প্ররোচিত করেন, যে কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার কর্মে উপস্থিত হতে বা কতর্ব্য সম্পাদনে বাধাগ্রস্ত করেন তাহলে তিনি অসদাচারনের দায়ে দন্ডিত হবেন। আর এ নিয়েই ক্ষুব্ধ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

তারা বলছেন, এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়ন হলে সরকারি কর্মজীবিদের প্রতিবাদ বা কথা বলার কোনো সুযোগ থাকবে না।

সারাবাংলা/জেআর/ইআ

সচিবালয় সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ