Wednesday 28 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পায়রা বন্দর নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ মে ২০২৫ ২২:১৫

‘উচ্ছেদকৃত ৬টি রাখাইন পরিবার ও নাগরিক উদ্যোগ’-এর যৌথ আয়োজনে আলোচনা সভা

ঢাকা: পায়রা সুমদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের সময় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৬টি রাখাইন পরিবারের ২৮ জন সদস্যকে তাদের পূর্বপুরুষদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হলেও এখনো ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের বিষয়টি অনিশ্চিত রয়ে গেছে। তিন বছর পার হলেও এই পরিবারগুলো স্থায়ী পুনর্বাসন তো দূরের কথা, প্রতিশ্রুত মাসিক ভাড়াও নিয়মিত পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (২৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘উচ্ছেদকৃত ৬টি রাখাইন পরিবার ও নাগরিক উদ্যোগ’-এর যৌথ আয়োজনে এক আলোচনা সভায় এই অভিযোগ তুলেছেন একাধিক বিশিষ্ট বক্তা ও অধিকারকর্মী।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘গত ৩ বছরে রাষ্ট্র এই পরিবারগুলোর পুনর্বাসন বা পূর্ণ ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা করেনি। ঘরবাড়ি, পুকুর, ধর্মশালা—সবই হারিয়েছেন তারা। মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও ৩৭ মাসের টাকা বাকি রয়েছে।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পরিকল্পিতভাবেই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জমিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের অধিগ্রহণ আইন জনবিরোধী—এ আইনে হাইকোর্টে মামলা করা যায় না, যা সংবিধানবিরোধী।’ তিনি দাবি করেন, ‘যতটুকু জমি নেওয়া হয়েছে, তার পূর্ণ মূল্য ছাড়াও যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও জরিমানা দিতে হবে।’

উচ্ছেদকৃত পরিবারের একজন সদস্য চিং ধামো রাখাইন সভায় বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় অধিগ্রহণের সময় আমাদের ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বসতভিটা কেড়ে নেওয়া হয় কোনো আলোচনা ছাড়াই। বসতবাড়ি ও গাছপালার কিছু ক্ষতিপূরণ পেলেও ভোগদখলকৃত জমির টাকাটা আজও পাইনি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি এ সময় ৭ দফা সমস্যা ও ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— কলাপাড়ার রাখাইন পল্লির পাশে পুনর্বাসন, প্রতিশ্রুত ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা দেওয়া অব্যাহত রাখা, বেদখলকৃত শ্মশান পুনরুদ্ধার ও সংস্কার করে হস্তান্তর, ধর্মীয় স্থান রক্ষায় সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা এবং কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের আগে রাখাইন জনগণের সম্মতি গ্রহণ।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, মানবাধিকারকর্মী মেইনথিন প্রমীলা, জাকির হোসেন ও মংচোথিন তালুকদার। তারা বলেন, ‘উন্নয়নের নামে ভূমি অধিগ্রহণের আড়ালে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের উচ্ছেদ ও নিঃশেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।’

সভা থেকে সরকারের প্রতি অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা, পুনর্বাসনের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা এবং সংবিধানসম্মত অধিগ্রহণ আইনের দাবি জানানো হয়।

সারাবাংলা/এফএন/এইচআই

ক্ষতিপূরণ পায়রা বন্দর ভূমি অধিগ্রহণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর