ঢাকা: নানা অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে দুর্বল হয়ে পড়া বেসরকারি খাতের ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক একীভূত করে সাময়িকভাবে সরকারের মালিকানায় নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হচ্ছে– ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
সোমবার (২৬ মে) একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি জুলাইয়ের মধ্যে এই ছয়টি ব্যাংককে সরকারের অধীনে এনে প্রয়োজনীয় মূলধন জোগান দিতে পারব। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে তাদের তারল্য (লিকুইডিটি) সহায়তা দিয়েছে।
গভর্নর বলেন, ‘সরকার এসব ব্যাংকের মালিক সাময়িকভাবে থাকবে। পরবর্তী সময়ে ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন শেষে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ও আন্তর্জাতিক কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার হস্তান্তর করা হবে। রি-অর্গানাইজেশনের সময়টা আমরা অনারশিপটা রাখবো।’
তিনি বলেন, ‘তবে এই জাজমেন্টটা এখনো করা হয়নি। অ্যাভিডেন্স গ্যাদারিং এখনো চলছে। আমি মনে করি এখানে আমাদের একটু দ্রুততা প্রয়োজন আছে অবশ্যই। সাথে যেটা হচ্ছে আমরা কিছু রেজাল্ট তো পাচ্ছি। যারা টাকা নিয়ে গেছে তাদেরও ঘুম হারাম করতে হবে। তারাও যেন শান্তিতে না থাকে। আমরাও আমাদের ঘুম হারাম করছি তাদের টাকা, আমাদের টাকা ফিরিয়ে আনার জন্য। তাদের কি ঘুম হারাম করবো না? অবশ্যই করতে হবে।’
উল্লেখ্য, চিহ্নিত ছয়টি ব্যাংকের মধ্যে পাঁচটি ব্যাংক ছিল বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। বাকি একটি ব্যাংক পরিচালনায় ছিলেন নজরুল ইসলাম মজুমদার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, একটি ব্যাংককে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের (রিস্ক-ওয়েটেড অ্যাসেট) বিপরীতে কমপক্ষে ১২.৫ শতাংশ মূলধন রাখতে হয়, এর মধ্যে ১০ শতাংশ মূলধন এবং অতিরিক্ত ২.৫ শতাংশ ‘ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফার’ হিসেবে সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক।
এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, এছাড়া যেসব ব্যাংকের এই মূলধনের ঘাটতি রয়েছে, সেসব ব্যাংকে আগামী চার বছরের মধ্যে ১২.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ-এ উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।