পঞ্চগড়: জেলার বোদা উপজেলায় দরিদ্র ও অসহায় নারীদের জন্য সরকারের ‘ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট’ (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির চাল বিতরণে টাকা নেওয়ার অভিযোগে আটক ১১ জন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের মধ্যে তিনজন নারী সদস্য জামিন পেলেও বাকি ৮ জন পুরুষ সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৭ মে) দুপুরে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আক্তার জুলিয়েট এ আদেশ দেন। আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. আদম সুফি এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনপ্রাপ্ত তিন নারী সদস্য হলেন— উপজেলার শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদের শেফালী রানী (১-৩ নম্বর ওয়ার্ড), বিলকিস বেগম (৪-৬ নম্বর ওয়ার্ড), রুপালী বেগম (৭-৯ নম্বর ওয়ার্ড)।
কারাগারে পাঠানো পুরুষ ইউপি সদস্যরা হলেন— একই ইউনিয়ন পরিষদের খলিলুর রহমান (১ নম্বর ওয়ার্ড), হামিজ উদ্দিন (২ নম্বর ওয়ার্ড), প্রায় নাথ রায় (৩ নম্বর ওয়ার্ড), সুনীল চন্দ্র রায় (৫ নম্বর ওয়ার্ড), দাহির উদ্দিন (৬ নম্বর ওয়ার্ড), খাদিমুল ইসলাম (৭ নম্বর ওয়ার্ড) মামুন ইসলাম (৮ নম্বর ওয়ার্ড) ও আশরাফুল ইসলাম (৯ নম্বর ওয়ার্ড)।
এর আগে সোমবার (২৬ মে) রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে বোদা উপজেলার ঝলইশালশিড়ি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাদের আটক করা হয়। মঙ্গলবার সকালে আদালতে হাজির করা হয় তাদের।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। যদিও এখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি, তবে একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছিল। বুধবার (২৮ মে) জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।
আদালত সূত্রে আরও জানা যায়, বিষয়টি দুদকের তফসিলভুক্ত হওয়ায় অভিযোগপত্রসহ জিডির অনুলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনের ঠাকুরগাঁও সমন্বিত কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
দুদক সূ্ত্রে জানা গেছে, তদন্ত শেষে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হবে। কারণ সরকারি ত্রাণ বা সাহায্য কর্মসূচির চাল বিতরণে ঘুষ বা অর্থ আদায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জানা গেছে, সোমবার চাল বিতরণের সময় প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছ থেকে ৫০০-৬০০ টাকা করে আদায় করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্তদের পরিষদ ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে নগদ ১ লাখ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধারসহ অভিযুক্তদের আটক করে।
এদিকে পঞ্চগড় আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. আদম সুফি জানান, আসামিদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত ৩ জনের জামিন ও ৮ জন ইউপি সদস্যের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।