Wednesday 28 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদ নিরাপত্তায় ডিএমপির ১৮ নির্দেশনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ মে ২০২৫ ২১:৫৮ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ ০০:১৬

ঢাকা: পবিত্র ঈদুল আজহা উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে এবং ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে এবং ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ডিএমপি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে পুলিশের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তা সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব। ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি কোরবানির পশু পরিবহন ও পশুর হাটের নিরাপত্তা, ঈদে বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিম্নবর্ণিত নির্দেশনাসমূহ মেনে চলার জন্য সম্মানিত নগরবাসীকে অনুরোধ করা হলো-

১. ফিটনেসবিহীন যানবাহন বা নৌযানে কোরবানির পশু পরিবহন করবেন না। কোরবানির পশুবাহী পরিবহন বা নৌযানের সামনে নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থান বা পশুর হাটের নাম লিখে ব্যানার টানিয়ে রাখুন। ট্রাক, লঞ্চ বা ট্রলারে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পশু পরিবহন করবেন না। নির্দিষ্ট স্থানে পশু লোড বা আনলোড করবেন।

২. পশু হাটে অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি হতে সাবধান থাকুন। কোনভাবে অপরিচিত কারো দেওয়া কোন কিছু খাবেন না। জালনোট সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং লেনদেনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন। পশু বিক্রয়লব্ধ অর্থ ব্যাংকে জমা রাখুন। নগদ অর্থ স্থানান্তরে ডিএমপির মানি এস্কর্ট সেবা গ্রহণ করুন।

বিজ্ঞাপন

৩. কোরবানির পশু পরিবহন, পশুর হাটে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত কোন তথ্য থাকলে নিকটস্থ পুলিশকে জানান।

৪. অনলাইনে কোরবানির পশু কেনায় সতর্ক থাকুন।

৫. বাসা-বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যেকোন অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারক করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে ছুটি প্রদান না করে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে যাতে তারা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সার্বিক তদারক করতে পারে।

৬. বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ত্যাগের পূর্বে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করতে হবে।

৭. বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণি-বিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসমূহ সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বাসা-বাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা এ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। রাতে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

৯. বাসা-বাড়ি ত্যাগের পূর্বে যে সকল প্রতিবেশী বা পাশের ফ্ল্যাটের অধিবাসী ঢাকায় অবস্থান করবেন তাদের বাসার প্রতি লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করতে হবে এবং ফোনে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।

বিজ্ঞাপন

১০. ভাড়াটিয়াগণকে পূর্বেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষ্যে বাসা ত্যাগের বিষয়টি অবহিত করতে হবে ।

১১. অনুমতি ব্যতীত কেউ যেন বাসা বা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে না পারে এ বিষয়ে বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করতে হবে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। বাসা বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখতে হবে। বাসার জানালা বা দরজার পাশে কোনো গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলতে হবে যাতে অপরাধীরা গাছের শাখা-প্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় প্রবেশ করতে না পারে।

১২. বাসা-বাড়ি বা প্রতিষ্ঠান ত্যাগের পূর্বে লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি বন্ধ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. মহল্লা বা বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে বা দুস্কৃতকারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করতে হবে। ঈদে মহল্লা বা বাসায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে অবহিত করতে হবে।

১৪. যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ-পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন। ভ্রমণকালে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রাখুন। চালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ দিবেন না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ করবেন না।

১৫. রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করুন। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ নেই সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে রাস্তা পার হোন। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন।

১৬. ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে কিংবা জয় রাইডিং করবেন না। এতে জীবন বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অপরিচিত কোন ব্যক্তির নিকট থেকে খাবার খাবেন না।

১৭. বাস মালিকদের প্রতি অনুরোধ-লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে না দেওয়া। চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভার টেকিং না করে সেজন্য চালককে নির্দেশ দেওয়া। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো যাবে না। যাত্রী পরিবহনে ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় বের করা যাবে না।

১৮. বাস চালকদের প্রতি অনুরোধ-বেপরোয়া ভাবে ওভার স্পিডে গাড়ি চালাবেন না, ঝুঁকিপূর্ণ ওভার টেকিং করবেন না। ক্লান্ত বা অবসাদ বা অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় সাথে রাখুন। আঞ্চলিক সড়ক বা মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলুন।

জরুরি প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য যোগাযোগের নম্বরসমূহ: ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের নম্বর: ০১৩২০-০৩৭৮৪৫; ০১৩২০-০৩৭৮৪৬; ২২৩৩৮১১৮৮; ০২৪৭১১৯৯৮৮; ০২৯৬১৯৯৯৯। জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর: ৯৯৯।

ঢাকা মহানগরবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ও জান-মাল রক্ষায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে মহানগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছে ডিএমপি। আপনার ঈদ যাত্রা ও পবিত্র ঈদ উদযাপন নিরাপদ, আনন্দময় ও উৎসবমুখর হোক।

সারাবাংলা/এমএইচ/এসআর

ঈদ নিরাপত্তা ডিএমপির নির্দেশনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর