ফরিদপুর: ফরিদপুরে স্ত্রী শান্তাকে সিগারেট দিয়ে পুড়িয়ে ও বেধড়ক পিটিয়ে করে হত্যার ঘটনায় স্বামী আসাদুজ্জামান বাচ্চু (৪২) কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও আদালত ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।
বুধবার(২৮ মে) বেলা সাড়ে ১২টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি বাচ্চু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আসামিকে পুলিশ পাহারায় জেল হাজাতে প্রেরণ করা হয়।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি বাচ্চুর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে ১ম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে রাজবাড়ী জেলায় মামলা চলমান রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০২২ সালে জেলার মধুখালী উপজেলায় পৌর এলাকার রুমির মুরগির ফার্মে কাজ করার সুবাদে ওই এলাকার ভাটিকান্দি মথুরাপুর গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের মেয়ে শান্তার সঙ্গে রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানা এলাকার কানাইমাতবার গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে আসামি বাচ্চুর বিয়ে হয়। বিয়ের তিন মাস পর থেকে স্ত্রীকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আসতেন। পরে একাধিকবার থানায় ও স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হওয়ার পর শান্তাকে নিয়ে সংসার করতে রাজি হয় তার স্বামী বাচ্চু। ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবর জেলার সদর উপজেলার দিরাজতুল্লাহ মাতুব্বর ডাঙ্গী এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে এমবিআই এগ্রো ফার্মে চাকরি করা অবস্থায় আসামি বাচ্চু তার স্ত্রীকে বেধরক মারপিট করে ও সিগারেট দিয়ে মুখোমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তালা ভেঙ্গে ঘরের ভেতর থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
এই ঘটনায় নিহতের মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। দীর্র্ঘ শুনানী ও সাক্ষ্য প্রমান শেষে আদালত আজ এই রায় দেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী মিয়া রতন রায়ের বিষয় নিশ্চিত করে জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাদুজ্জামান বাচ্চু ইতোপূর্বে দু্টি বিয়ে করেন। যার মধ্যে প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে পার্শ্ববর্তী জেলা রাজবাড়ী আদালতে মামলা রয়েছে। আসামি বাচ্চু তার তৃতীয় স্ত্রী শান্তাকে হত্যার অভিযোগে সন্দেহাতিতভাবে প্রমানিত হওয়ায় আদালত আজ এই রায় দেন। এই রায়ে রাষ্ট্র পক্ষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে। এ ধরণের অপরাধীদের জন্য এই রায় দৃষ্টান্তমূলক থাকবে বলে জানান তিনি।