Thursday 29 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মোংলা বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতি, মালামালসহ আটক ৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ মে ২০২৫ ১৭:১০ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ ১৭:১২

জব্দ মালামালসহ গ্রেফতার ৩।

বাগেরহাট: মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙররত এমভি সেজুতি জাহাজে ১২ জন ডাকাত দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ প্রবেশ করে মেশিনারিজসহ মালামাল লুটের ঘটনায় ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড। এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে মালামাল।

বুধবার (২৮ মে) দুপুরে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন্স কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গেল সোমবার (২৬ মে) রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙররত এমভি সেজুতি নামক বাংলাদেশি একটি জাহাজে ১২ জন ডাকাত দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ প্রবেশ করে। তারা জাহাজের ক্রুদের জিম্মি করে এবং কিছু মেশিনারিজ মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উক্ত ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি অনুসন্ধানী দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। এরপর কোস্ট গার্ড জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে আলাপ করে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোংলা এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। এরপর গত ২৭ মে ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং ডাকাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিন জন ব্যক্তিকে আটক করে।

উদ্ধার মালামালের মধ্যে রয়েছে, ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরনের স্পেয়ার পার্টস, ইঞ্জিনের বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারি চার্জার ও অন্যান্য জাহাজের গুরূত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে এটি একটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও জাহাজের কর্তৃপক্ষ, অফিসার, ক্রু ও আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিক ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। কারণ, জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পাচ্ছিল না। এতে করে নাবিকদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এ কারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতোপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্রুপ/ডাকাতের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করে জাহাজের নাবিকরা।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার ব্যক্তিদের বরাতে তিনি আরও জানান, জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুট করা মালামাল বিক্রির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করেন।

উদ্ধার মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। জাহাজের মালিক নাবিকদের বেতন ভাতা না দেওয়া এবং গত ৬ মাস যাবৎ জাহাজটিকে এভাবে ফেলে রাখার বিষয়টিও তদন্তের আওতায় আনতে হবে। সাজানো এই ডাকাতির ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদপত্রে বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রকাশ করা হয় বলেও মনে করেন।

বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দেশের জলসীমায় নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জানমালের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতে এরূপ কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তা কঠোরভাবে দমন করবে বলে জানানো হয়।

সারাবাংলা/এমপি

ডাকাতি বাণিজ্যিক জাহাজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর