ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। সংগঠনের সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার তামান্না ও সেক্রেটারি পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মোছা. আফসানা আক্তার।
বুধবার (২৮ মে) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনটির সেক্রেটারি আফসানা আক্তার। এদিন সংগঠনটি নারী শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে।
ছাত্রীসংস্থা বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পক্ষ থেকে শাখার সভানেত্রী ও সেক্রেটারির নেতৃত্বে একদল প্রতিনিধি নারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিস্তারিত আলোচনা করেন। আলোচনায় ক্যাম্পাসের নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদারকরণ, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সহজলভ্যতা, নারী শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত কমনরুম, নামাজরুম ও ওযু খানার ব্যবস্থা, মাতৃত্বকালীন সময়ে সহযোগিতা, আবাসন সংকট নিরসন, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজনে হলে প্রবেশের অনুমতি, যৌন হয়রানি মুক্ত ক্যাম্পাস, হলভিত্তিক মেডিসিনের সুব্যবস্থাসহ বেশকিছু দাবি পেশ করা হয়। সেই সাথে উক্ত দাবিসমূহ স্মারকলিপি আকারে মাননীয় উপাচার্যের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, এ সময় উপাচার্য মনোযোগ দিয়ে প্রতিনিধিদলের কথা শোনেন এবং সার্বিক বিষয় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা ও সমাধান করার আশ্বাস দেন।
এ প্রসঙ্গে সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন নিপীড়নের কারণে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে ক্যাম্পাসে আমরা কাজ শুরুর চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, এই সময়ের মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীসংস্থার প্রাথমিক কাঠামো গঠন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে শাখা সভানেত্রী ও সেক্রেটারির দায়িত্ব প্রদানের মাধ্যমে সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চালু করব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি আফসানা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহৎ ছাত্রী সংগঠন। ১৯৭৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের সংগঠন ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রীসংস্থার কার্যক্রমের রয়েছে বিরাট ইতিহাস। অতীতে ছাত্রীসংস্থা ডাকসুতেও অংশগ্রহণ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের জন্য কাজ করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা সবচেয়ে বড় ভিক্টিম ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নতুন পরিসরে কাজ শুরু করেছি। আমরা আশা করছি, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে ঢাবি প্রাশাসন দ্রুততম সময়ের মাঝে কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন ইনশাআল্লাহ। নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও কল্যাণের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা অতীতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। সামনের দিনগুলোতেও নারীদের ন্যায্য দাবী ও অধিকার আদায়ে এই ভূমিকা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।’