লালমনিরহাট: জেলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছয় ছাত্রকে পুড়িয়ে হত্যা ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার নয় মাস পর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি আরমান আরিফ (২৭) লালমনিরহাট সদর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর পরই অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- পৌর আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য শরীফ মোহাম্মদ আতাউল্লাহ (৫০), আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ হাসান ওরফে ভুট্ট কমিশনার (৪৮), আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম খান বকুল (৫৬), আওয়ামী লীগ নেতা বাবলু মিয়া (৪২), যুবলীগ নেতা আমিরুল হক চৌধুরী দোয়েল (৩৪) ও যুবলীগ নেতা জুয়েল শেখ (২৮)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ‘ঘটনার দিন শহরের মিশনমোড় হতে আন্দোলনকারীদের মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার যাওয়ার পথ লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগের শতাধিক কর্মী বেআইনিভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শহিদ মিনারের সামনে অবস্থান করেন। মিছিল শহিদ মিনারের কাছে পৌঁছাইলে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খান (৪৬) এর নির্দেশে আওয়ামী অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়।’
এজহার থেকে আরও জানা যায়, ‘এ সময় অনেকে গুরতর আহত হন। সেখান থেকে ছাত্র প্রতিনিধি জোবায়ের হোসেন (১৭), আল শাহরিয়ার রিয়াদ তন্ময় (১৯), শাহরিয়ার আল আফরোজ শ্রাবণ (১৮), জনি মিয়া (২০), রাধিক হোসেন রুশো (১৯), মো. রাজিব উল করিম সরকারদের (১৮) দের ধরে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতা সুমন খানের বহুতল বাড়িতে তালাবদ্ধ করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।’
পরে ওইদিনই আগুনে পুড়ে যাওয়া বহুতল ভবনের একটি রুমে পুড়ে ভস্ম হওয়া ৬ ছাত্র প্রতিনিধির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে হত্যা ও অর্থ পাচারসহ ১০টি মামলায় লালমনিরহাটের বহুল আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী, হুন্ডি ব্যবসায়ী ও ৬ ছাত্র হত্যা মামলার প্রধান আসামি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানকে গত বছরের ১১ নভেম্বর পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি তদন্ত) ও তদন্তকারী অফিসার বাদল কুমার মন্ডল জানান, আইনি জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন পর ৬ ছাত্র হত্যা মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এর পরপরই অভিযান চালিয়ে এজাহার নামীয় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।