ঢাকা: প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফত আহমেদ বলেছেন, আমাদের অবশ্যই ২৪-এর জুলাই-আগস্টের কথা বলতে হবে। এসব মাসই আমাদের জাতির বিবেককে জাগ্রত করেছিল। যখন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে অনাচার, বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান দখল করা হয় শুধুমাত্র একটি গোষ্ঠির সেবা করার জন্য, কিংবা নিপীড়িতদের আর্তনাদ আদালতের রায়ের চেয়েও জোরে প্রতিধ্বনিত হয়; তখন জনগণ রাস্তায় নেমে আসে।
বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ওয়াডহ্যাম কলেজ থেকে আজীবন সম্মানসূচক ফেলোশিপ পাওয়ায় বারের পক্ষ থেকে এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ঢাকার প্রতিটি চত্বরে, শাহবাগ ও শহিদ মিনারের প্রাণকেন্দ্রে তরুণ কণ্ঠ একক, দৃঢ় চিৎকারে উঠেছিল- ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই’। এটি কোনো স্লোগান ছিল না। এটি আদালত কক্ষে নয়, জনসাধারণের চত্বরে ঘোষিত একটি রায় ছিল।
প্রধান বিচারপতি বলেন, নৈতিক স্বচ্ছতার ওই অভ্যুত্থান এমন একটি শাসনব্যবস্থার পতনের দিকে পরিচালিত করেছিল যারা আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল এবং ন্যায় বিচারের সঙ্গে আপস করেছিল। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিচার বিভাগকেও রেহাই দেওয়া হয়নি। বিচারিক বৈধতার ভিত্তিগুলিই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। যাদের কাজ জনগণের সেবা করা। আমার নিয়োগ কোনো আনুষ্ঠানিক পদোন্নতি হিসাবে নয়, বরং একটি গৌরবময় মতামত হিসেবে। আমাকে দুর্ঘটনাক্রমে নির্বাচিত করা হয়নি বা মর্যাদার জন্য নিযুক্ত করা হয়নি। আমাকে এমন একটি জনগণের নৈতিক শক্তি দ্বারা ডাকা হয়েছিল যারা বিচার বিভাগকে সাহস, সত্য ও জবাবদিহিতার সঙ্গে পুনর্গঠিত করার দাবি জানিয়েছিল।
তিনি বলেন, এই সম্মান কেবল একজন বিচারকের নয় বরং এমন একটি জাতির জন্য- যারা স্বৈরাচারের পরিবর্তে ন্যায়বিচার, প্রতারণার পরিবর্তে সত্য এবং নীরবতার পরিবর্তে সংস্কারকে বেছে নিয়েছে।
বারের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলনের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো.আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামন, সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন।