Saturday 31 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হালদায় ডিম ছেড়েছে ‘মা মাছ’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ মে ২০২৫ ১০:৪২ | আপডেট: ৩০ মে ২০২৫ ১২:২৪

কিছু এলাকায় জেলেরা ভালো পরিমাণে মাছের ডিম পেয়েছে। ছবি: সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রায় দুই মাস ধরে জেলেদের অপেক্ষায় রাখার পর অবশেষে হালদা নদীতে পূর্ণাঙ্গভাবে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় প্রজনন সক্ষম মাছ, যেগুলোকে স্থানীয়রা ‘মা মাছ’ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাত আনুমানিক ২টা থেকে প্রকৃতির এই অনুকূল পরিবেশে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট থেকে রাউজানের রামদাশ মুন্সির ঘাট পর্যন্ত হালদা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

মাছের ডিম। ছবি: সারাবাংলা

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কিছু এলাকায় জেলেরা ভালো পরিমাণে ডিম পেয়েছেন। তবে কিছু এলাকায় জেলেরা প্রত্যাশিত পরিমাণে ডিম সংগ্রহ করতে পারেননি। এতে এবার ডিমের পরিমাণ কেমন, তা এখনও নির্ধারণ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

অমাবস্যার শেষে আকাশে বজ্রপাত আর সঙ্গে শুরু হয় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ। এর মধ্যেই হালদায় নামে পাহাড়ি ঢল।

চৈত্র মাসের শেষার্ধ থেকে হালদা পাড়ের জেলেরা জাল-নৌকা নিয়ে নদীতে অপেক্ষার পর ডিম সংগ্রহের উৎসবে মেতে ওঠেন আহরণকারীরা।

নদীতীরে অবস্থান করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিচার্স ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মো. মনজুরুল কিবরিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাতে জোয়ারের সময় অঙ্কুরীঘোনা থেকে আজিমেরঘাট পর্যন্ত এলাকায় ডিম পাওয়া গেছে। ভোর থেকে আরও বিভিন্ন পয়েন্টে ডিম পাওয়া যাচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ চলবে।’

এবার ডিমের পরিমাণ কেমন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিছু পয়েন্টে জেলেরা ভালো ডিম পেয়েছেন। আবার কিছু জেলে এসে বলছেন, তারা প্রত্যাশিত পরিমাণে ডিম পাননি। সার্বিকভাবে ডিমের পরিমাণ কেমন, সেটা জানতে আরও সময় লাগবে।’

বিজ্ঞাপন

নদী থেকে সংগ্রহ করা ডিম হালদা তীরে কুয়োর মধ্যে রেখে রেণু ফোটানো হবে। রেনু থেকে পোনা হবে।

এর আগে, দুইদফায় কিছু ডিম ছাড়ে রুই, মৃগেল, কাতলা ও কালিবাউশ- এই চার প্রজাতির প্রজনন সক্ষম মাছ। সংগ্রহকারীরা সেগুলোকে ‘নমুনা ডিম’ বলেছিলেন।

চট্টগ্রামের রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার প্রায় ৯৮ কিলোমিটার ‍দীর্ঘ এলাকা জুড়ে আছে হালদা নদী। বিভিন্নস্থানে যেখানে সাধারণত মা মাছ ডিম ছাড়ে, সেখানে প্রায় ৩০০ নৌকায় দেড় হাজার মৎস্যজীবী ডিম সংগ্রহের অপেক্ষায় ছিলেন।

প্রতি বছর চৈত্র থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে পূর্ণিমা-অমাবস্যার তিথিতে বজ্রসহ বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢল নামে হালদা নদীতে। আর তখনই তাপমাত্রা অনুকূলে থাকলে ডিম ছাড়ে কার্প জাতীয় মাছ। সাধারণত মধ্য এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে হালদায় ডিম ছাড়ে মা মাছ।

হালদা রিভার রিচার্স ল্যাবরেটরির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কেজি, ২০২১ সালে সাড়ে ৮ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ হয়েছিল। ২০২০ সালে হালদা নদীতে রেকর্ড পরিমাণ ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি ডিম পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৯ সালে প্রায় সাত হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে স্থানীয়রা ডিম সংগ্রহ করেছিলেন ২২ হাজার ৬৮০ কেজি।

এর আগে ২০১৭ সালে মাত্র ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়।

২০২৩ ও ২০২৪ সালে সংগৃহীত ডিমের পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি।

সারাবাংলা/আরডি/এমপি

মা মাছ মাছের ডিম হালদা নদী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর