Saturday 31 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হর্টেক্স-পার্টনার প্রকল্পের জিএপি-সনদপ্রাপ্ত আমের বিপণন শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৩০ মে ২০২৫ ১৯:৩৪ | আপডেট: ৩১ মে ২০২৫ ০০:২৪

জিএপি-সনদপ্রাপ্ত আমের বিপণন

ঢাকা: হর্টেক্স ফাউন্ডেশন ও পার্টনার প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে গুড অ্যাগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস (জিএপি) অনুসারে চাষ করা আমের বিপণন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। এটি দেশের ফল রফতানি বৃদ্ধির দিকে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

শুক্রবার (৩০ মে) রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় অবস্থিত কৃষক বাজারের এ উদ্যোগের উদ্বোধন করেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এবাদুল্লাহ মিয়ান।

হর্টেক্স ফাউন্ডেশন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই) এবং কৃষি বিপণন অধিদফতর (ডিএএম) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিপণন সহায়তা প্রদান করে জাহেরা সিড কর্পোরেশন, আরত এগ্রো বিডি এবং এস কে ইন্টারন্যাশনাল।

কৃষি সচিব দীর্ঘদিনের লজিস্টিক ও নীতিগত বাধা দূর করে কৃষি রফতানিকে আধুনিকীকরণের জন্য সরকারের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু জাতিগত ভোক্তাদের জন্য নয়, বরং মূলধারার বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশের জন্য দেশভিত্তিক রফতানি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছি। বাংলাদেশের আম বিশ্বব্যাপী উচ্চ চাহিদা থাকলেও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে রফতানির পরিমাণ কম। জিএপি ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা এই বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।’

তিনি ঘোষণা দেন, শিগগিরই আম রফতানিকারকরা একটি সরলীকৃত প্রক্রিয়ার সুবিধা পাবে, যেখানে কাস্টমস ও সুরক্ষা ছাড়পত্র একক পয়েন্টে দেওয়া হবে। এতে সময় ও খরচ উভয়ই কমবে। এই সমন্বয় আমাদের ফল ও সবজি রফতানির গুণগত মান ও দক্ষতা উভয় দিক থেকে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।

লজিস্টিক ও প্রক্রিয়াকরণে আন্তঃমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতেও কাজ চলছে। বিমান পরিবহন খরচ কমানোর বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। পাশাপাশি, হার্ভেস্ট-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা যেমন হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট ও কোল্ড চেইন অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে।
বর্তমানে গাবতলীতে হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট সুবিধা চালু রয়েছে। শ্যামপুর ও পূর্বাচলে অতিরিক্ত সুবিধা নির্মাণাধীন। শ্যামপুরে কাস্টমস অপারেশন স্থানান্তরের পরিকল্পনাও রয়েছে, যেখানে কাস্টমস ও বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে ছাড়পত্র দেবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশের আম রফতানির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। গত অর্থবছরে আমরা মাত্র ১,৩০০ টন আম রফতানি করেছি। কিন্তু বাংলাদেশ ঘরোয়া চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বছরে ৫০ হাজার টন পর্যন্ত আম রফতানি করতে সক্ষম।

বিজ্ঞাপন

তিনি ন্তর্জাতিক বাজারে দৃষ্টিনন্দন রঙ ও গুণগত মানের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের রুচির সঙ্গে স্থানীয় উৎপাদনকে সামঞ্জস্য করতে গবেষণা চলমান রয়েছে। সরকার কৃষক বাজার এর মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমের মতো মৌসুমি ফলকে আরও সহজলভ্য করতে কাজ করছে, যা রফতানি লক্ষ্য ও স্থানীয় বাজার চাহিদা পূরণে সহায়তা করে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল আলম, কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক নাসির-উদ-দৌলা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম, হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড সৈয়দ মো রফিকুল আমিন এবং পার্টনার প্রকল্পের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই উদ্যোগ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ, যা কৃষিকে একটি টেকসই, নিরাপদ ও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক খাতে রূপান্তরিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ বাস্তবায়ন করছে, যা জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৮ পর্যন্ত চলবে। সরকার, বিশ্বব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাড)-এর অর্থায়নে এই প্রকল্প দেশের ৮ বিভাগ, ১৪ অঞ্চল, ৬৪ জেলা ও ৪৯৫ উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন ৭টি বাস্তবায়নকারী সংস্থা এই প্রকল্পে কাজ করছে, যেখানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেশন ইউনিট (পিসিইউ) প্রধান সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। হর্টেক্স ফাউন্ডেশনসহ ৮টি সহযোগী সংস্থা এই উদ্যোগের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসআর

আম কৃষক বাজার জিএপি-সনদপ্রাপ্ত বিপণন শুরু হর্টেক্স